চাকরিপ্রত্যাশীদের পরীক্ষার ওএমআর শিট ঠোঙা হয়ে বিকোচ্ছে বর্ধমানের দোকানে–দোকানে। —নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে জটিলতা অব্যাহত। দুর্নীতির জাঁতাকলে পড়ে সফল চাকরিপ্রার্থীরাও চাকরির প্রত্যাশায় বসে রয়েছেন। চাকরির দাবিতে চলছে আন্দোলন, ধর্না। তখন সেই সব চাকরিপ্রত্যাশীদের পরীক্ষার ওএমআর শিট ঠোঙা হয়ে বিকোচ্ছে বর্ধমানের দোকানে–দোকানে। ২০১২ সালের টেট পরীক্ষার ওএমআর শিট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হেফাজতে না থেকে কী ভাবে তেলেভাজার দোকানে ঠোঙা হল। তা-ই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
টেটে সফল চাকরিপ্রার্থীরা স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগের জন্য আন্দোলন করছেন। অভিযোগ, ২০১২ সালে টেট উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি পাননি রাজ্যের এক লক্ষ ৪২ হাজার পরীক্ষার্থী। তাঁদের হকের চাকরি বিক্রি হয়েছে, এমন অভিযোগে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন কেউ কেউ। তখনই বর্ধমানে শহরে চোখে পড়ল আর এক ছবি। বেশ কয়েকটি ঠোঙা খুলে পাওয়া গেল ২০১২ সালের ওএমআর শিটের খণ্ডাংশ। যে ওএমআর শিট বর্ধমান শহরে ঠোঙা হয়ে বিক্রি হয়ে গিয়েছে, সেখানে রোল নম্বরের জায়গায় লেখা ১১০৫২৩০০। কোয়েশ্চেন বুকলেটের জায়গায় রয়েছে নম্বর।
খোঁজখবর করে জানা গিয়েছে, এক পরীক্ষার্থীর নাম স্বপন বেরা। ঠিক তেমনই আরও কয়েক জন চাকরিপ্রার্থীর ওএমআর শিট ঠোঙা হয়ে বিক্রি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুরজিৎ দে। যাঁর রোল নম্বর ছিল ১১০৫২৪১৩। তিনি কলকাতার একটি স্কুলে চাকরির পরীক্ষায় বসেছিলেন। শেখ সেলিম আহমেদ নামে আর এক চাকরিপ্রার্থীর রোল নম্বর ছিল ১১০৫২২৯৯। তিনি কলকাতার একটি স্কুল থেকে ২০১২ সালে টেট দিয়েছিলেন। ছিলেন মিলি বেহেরা। যাঁর রোল নম্বর ছিল ৩৩০৫৯৯০৫। মিলি মেদিনীপুর টাউন স্কুল থেকে টেট দিয়েছিলেন। ঠোঙা হয়ে যাঁদের ওএমআর শিট বর্ধমান শহরের হাতে ঘুরছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন শুভেন্দু মিশ্র। তাঁর রোল নম্বর ১১০৫২৪১৬। ছিলেন শত্রুঘ্ন দাস। তাঁর রোল নম্বর ১২০৩৬২০৯। এ রকম একশোর বেশি টেটের ওএমআর শিট এখন দোকানে দোকানে ঠোঙা হয়ে খদ্দেরের হাতে হাতে ঘুরছে। কিন্তু নিয়মমাফিক এগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে থাকা উচিত ছিল। এ নিয়ে শোরগোল শহরে। যদিও এখনও কোনও রাজনৈতিক দল এ নিয়ে সরাসরি বিবৃতি দিতে রাজি হননি।