প্রদীপে আলোয় সেজে উঠেছে অযোধ্যা ধাম। ছবি: পিটিআই।
আকাশে উড়ে গিয়েছে নরেন্দ্র মোদী, যোগী আদিত্যনাথের বিমান। অযোধ্যার মাটিতে নেমে এসেছে বাঁধ ভাঙার আনন্দ।
সকাল থেকেই অযোধ্যার দোকানপাট, বাজার পুরোপুরি বন্ধ ছিল। বিকাল ৫টা নাগাদ সব খুলতে শুরু করেছে। তবে দু’দিন ধরে চলে-থাকা যান নিয়ন্ত্রণ এখনও ওঠেনি। তবে ভক্তেরা সে সবের ধার ধারছেন না। হেঁটে হেঁটেই শহরের পরিক্রমা পথ ধরে চলছে ভক্তদের মিছিল। নানা রঙের পোশাকের সাধু-সন্তের সঙ্গে মিশে রয়েছেন দেশের নানা জায়গা থেকে আসা সাধারণ মানুষ। সন্ধ্যা নামতেই পারদ নামতে শুরু করেছে অযোধ্যার। সারাদিন ধরে চলার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চও সন্ধ্যায় ফাঁকা। বহুদিন ধরে কাজ চললেও অযোধ্যাকে সাজানোর কাজ রবিবারই শেষ হয়েছে। ফলে সোমবার সন্ধ্যার অযোধ্যা নতুন চেহারা নিয়েছে সব আলো জ্বলে ওঠায়। তবে আসল ছবি অন্য— কড়া শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার স্বস্তির ছবি।
রামমন্দিরের উদ্বোধন হয়ে গেলেও এখনই সদ্য প্রাণ পাওয়া রামলালার দর্শন করা যাবে না। রামমন্দির তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের পক্ষে সভাপতি মহন্ত নিত্যগোপাল দাস জানিয়ে দিয়েছেন, প্রাণপ্রতিষ্ঠার পরে সোমবার সন্ধ্যারতির পর বিশ্রাম করবেন রামলালা। সাধারণ ভক্তেরা মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দর্শন করতে পারবেন। তবে জেলা প্রশাসনের অনুমান, সাধারণ মানুষ রাত থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে যেতে পারেন। রবিবার রাতেই হোটেল বা ধর্মশালায় জায়গা না থাকায় অনেক মানুষ রাস্তায় রাত কাটিয়েছেন। প্রশাসন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের তরফে তাঁদের জন্য কম্বলের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সোমবার রাতে যাতে কেউ লাইনে না দাঁড়িয়ে পড়েন রামলালাকে দর্শনের জন্য, সেই মর্মে প্রশাসনের তরফে অনুরোধও করা হচ্ছে। তবে প্রবল জনস্রোত কতটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে।
রামমন্দিরে যাওয়া না গেলেও অযোধ্যার অন্যতম প্রধান ধর্মস্থান হনুমানগড়িতে পুজো দেওয়ার ভিড় লেগে গিয়েছে। প্রদীপ জ্বালিয়ে সাধারণ মানুষ পুজো দিতে শুরু করেছেন। তবে ‘অকাল দীপাবলি’ পালনের যে ডাক প্রধানমন্ত্রী দিয়েছিলেন, সেটা মূলত পালিত হচ্ছে সরযূ নদীর তীরে। সেখানেও লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম। রাম কি পৌরীর চাতালেও সাজানো হচ্ছে প্রদীপ। সাধুসন্তদের সঙ্গে সেই কাজে লেগে পড়েছেন অযোধ্যার উৎসবে যোগ দিতে আসা মানুষেরা। আগে থেকেই অযোধ্যা শহরের সব বাড়ি, দোকান, হোটেলের ছাদে গেরুয়া পতাকা লাগানো হয়েছিল। সন্ধ্যায় সর্বত্রই জ্বলছে প্রদীপ।
অযোধ্যা ধাম স্টেশন গত শুক্রবার রাত থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সোমবারও স্টেশন বন্ধ রয়েছে। তবে মঙ্গলবার থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার সম্ভাবনা। প্রশাসনিক মহল মনে করছে, এর পরেই কিছুটা পাতলা হতে পারে শহরের ভিড়। তবে নতুন ভক্তেরাও আসবেন। ফলে আগামী এক মাসের বেশি সময় শহরে ভিড় থাকবে ধরে নিয়েই যাবতীয় ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বিভিন্ন ধর্মশালা এবং সংগঠনও এক মাস ধরে ভান্ডারা-সহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার জন্য তৈরি রয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই রামলালা দর্শনের ভিড় শুরু হবে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।