—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
থানার সামনে দাঁড়িয়ে প্রথমে চিলচিৎকার। পুলিশ কিছু বুঝে উঠতে না উঠতেই একে একে গায়ে পেট্রল ঢাললেন পাঁচ জন। আগুন ধরাতে যাবেন, ঠিক সেই মুহূর্তে তাঁদের সরিয়ে আনে পুলিশ। সোমবার বর্ধমান থানার সামনে তৈরি হল নাটকীয় পরিস্থিতি। গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা পাঁচ জনের অভিযোগ, পুলিশ মিথ্যা মামলায় তাঁদের পরিবারের সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, রুবেল শেখ নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অন্য দিকে, ধৃত রুবেলের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ‘‘গাঁজা পাচারের মিথ্যা কেস দেওয়া হয়েছে ওর নামে।’’ তাঁদের দাবি, মাদক মামলাতেই চার বছর চার মাস জেল খেটে সম্প্রতি মুক্তি পান রুবেল। তার পর তিনি ‘ভাল ভাবে জীবনযাপন’ করছিলেন। রুবেলের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে জোর করে ওকে গ্রেফতার করেছে।’’
সোমবার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন রুবেলের বাবা, স্ত্রী, মেয়ে এবং দুই দিদি। হুমকি দেন তাঁরা সবাই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করবেন। এমনকি, গায়ে পেট্রল ঢেলেও ফেলেন। তখনই তৎপর হয় পুলিশ। জোর করে সরিয়ে দেওয়া হয় পাঁচ জনকে।
রুবেলের স্ত্রী ফিরদৌস বিবি বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে আমার স্বামী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। তাকে আবারও গত শনিবার রাতে পুলিশ নিয়ে এসেছে। আমি পরিচারিকার কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালাই। আমার এক ছেলে এবং মেয়ে রয়েছে। আছেন বৃদ্ধ শ্বশুর। আমরা গরিব মানুষ বলে পুলিশ মিথ্যা অভিযোগে এই সব করছে। আমরা ওর (রুবেল) মুক্তি চাই।’’ রুবেলের দিদি সরিফা বেগমেরও অভিযোগ একই। তিনি বলেন, ‘‘ভাইকে মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আমরা এর বিহিত চাই। পুলিশ ভাইয়ের হাতে গাঁজা ধরিয়ে দিয়ে ছবি তুলেছে। তাকে থানায় নিয়ে গিয়ে প্রচণ্ড মারধর করেছে।’’
যদিও পুলিশ ওই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। বর্ধমান থানার আইসি দিব্যেন্দু দাস বলেন, ‘‘রুবেল সব রকম অপরাধ করেছে। গাঁজা, চুরি, ছিনতাই— সব অভিযোগ রয়েছে।’’