রাস্তাতেই পড়ে রয়েছে যন্ত্রপাতি। ইটাপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
গ্রামবাসীদের একাংশের টাকা চাওয়ার জেরে বারাবনির ইটাপাড়া পঞ্চয়েত এলাকায় রাস্তার কাজ এখনও শুরু করা যায়নি বলে অভিযোগ। প্রায় কুড়ি দিন ধরে বন্ধ নির্মাণকাজ। ঠিকাদার সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার কর্মীরা কাজ শুরু করতে গিয়ে ফের বাধার মুখে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, টাকা না পেলে কাজ করতে দেওয়া হবে না। রাস্তার কাজে বারবার বাধা পড়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেও। প্রশাসন কেন এ ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ করছেন না, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কস্তুরী বিশ্বাস অবশ্য দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন। কাজে যাঁরা বাধা দিচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে বারাবনি থানায় এফআইআর করা হবে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
বাংলা গ্রামীণ সড়ক যোজনায় ইটাপাড়ার পাকুড়িয়া মোড় থেকে মারংগুটু গ্রাম পর্যন্ত একটি বিটুমিনের রাস্তা তৈরির বরাত দেয় পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদ। লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পরে কাজে হাত দেয় বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থা। কিন্তু অভিযোগ, হঠাৎ স্থানীয় খয়েরবাঁধ গ্রামের কিছু লোকজন একটি ধর্মীয় স্থানের উন্নয়নের জন্য ঠিকাদারের কাছে প্রায় এক লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা দাবি করেন। ঠিকাদার টাকা দিতে অস্বীকার করায় কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাস্তা তৈরির দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, সোমবারও কর্মীরা কাজে নামার তোড়জোড় শুরু করেছিলেন। কিন্তু বাধার মুখে প্রাণভয়ে যন্ত্রপাতি ফেলে রেখেই ফিরে আসেন তাঁরা।
বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, মারাংগুটু, খয়েরবাঁধ, তালকানালি, নাদাই ও পাকুড়িয়া গ্রামের প্রায় সাড়ে বারো হাজার বাসিন্দার এই রাস্তাটি তৈরির দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। বিকাশ সোরেন নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আশা ছিল বর্ষার আগেই রাস্তা তৈরি হবে। কাদায় হাঁটার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাব।’’ কিন্তু কিছু লোকের বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের অভিযোগে রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কস্তুরী বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। সরকারি কাজে বাধা দেওয়া অপরাধ। দ্রুত খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করছি।’’ বারাবনির বিডিও সুরজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁরা কাজে বাধা দিচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার ভাবনা চিন্তা চলছে।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুভদ্রা বাউড়িও জানান, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেছেন। যাঁরা বাধা দিচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ করে কাজ শুরু হবে।
তৃণমূলের অভিযোগ, যাঁরা টাকা চেয়ে কাজে বাধা দিচ্ছেন তাঁরা বিজেপির কর্মী-সমর্থক। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘প্রশাসন ব্যবস্থা নিক। যারা বাধা দিচ্ছে তাদের গ্রেফতার করলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে তারা কাদের লোক।’’