দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
রাস দেখে মোটরভ্যানে নবদ্বীপ থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। তাঁদের মধ্যে এক জন কিশোর। আহতের সংখ্যা চার। সোমবার রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটে পূর্বস্থলীর হেমায়েতপুর মোড় সংলগ্ন নিচু চাঁপাহাটি এলাকায় এই দুর্ঘটনায় মৃতদের নাম ঋতু দে (২১) ও সঞ্জু দাস (১১)। গুরুতর জখম চার জনের চিকিৎসা চলছে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোমবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ নাদনঘাটে এসটিকেকে রোডের নিচু চাঁপাহাটি সাধুর আশ্রমের কাছে একটি গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় ওই মোটরভ্যানের। মোটরভ্যান থেকে আরোহীরা ছিটকে পড়েন রাস্তায়। সেই সময়ে উল্টো দিক থেকে দুরন্ত গতিতে আসা একটি মালবোঝাই ট্রাক পিষে দেয় রাস্তায় পড়ে থাকা ঋতু দে ও সঞ্জু দাসকে। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ বাকিদের উদ্ধার করে নবদ্বীপ হাসপাতালে পাঠায়।
দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ঋতুর স্বামী শ্রীদাম দে, সঞ্জুর বাবা গণেশ দাস। মঙ্গলবার নবদ্বীপ হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে শ্রীদাম জানান, সোদপুর থেকে রাস দেখতেই চাঁপাহাটিতে মামার বাড়ি এসেছিলেন। সোমবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদা বাড়ি ফিরবেন বলে নবদ্বীপ রেলগেট থেকে একটা মোটরভ্যান ভাড়া করেন। তাতে স্ত্রী, বোন, মামা, মামার ছেলে-সহ জনা আটেক ছিলেন। রাস্তায় মোটরভ্যানের সঙ্গে প্রথমে একটি মারুতি গাড়ির সামনাসামনি ধাক্কা লাগে। সবাই রাস্তায় ছিটকে পড়ে যান। তখনই উল্টো দিক থেকে একটি ট্রাক এসে পড়ে। শ্রীদামবাবুর পায়ের উপর দিয়ে লরির চাকা চলে যায়। পিষে দেয় তাঁর স্ত্রী ও ভাগ্নেকে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে পূর্বস্থলীর নিমতলা অঞ্চলের টালিভাটা এলাকায় মৃত বালকের বাড়িতে ভিড় করেন প্রতিবেশীরা। সঞ্জুর মা কাজল দাসও মোটরভ্যানে ছিলেন। চোখের সামনে ছেলের দেহ দেখার পরে এখনও প্রকৃতস্থ হতে পারেননি। বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সঞ্জু এলাকার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে তৃতীয় শ্রেণির মেধাবী ছাত্র ছিল। নাদনঘাট থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাক, গাড়ি ও মোটরভ্যানটি আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার দেহ ময়না-তদন্তের জন্য শক্তিনগর পাঠায় পুলিশ।