ব্যবহার হচ্ছে এই ব্যাগ। ছবি: অিত বন্দ্যোপাধ্যায়
বছর দুই আগে পুরসভা ও প্রশাসনের লাগাতার অভিযানের ফলে প্লাস্টিকের ফিনফিনে ক্যারিব্যাগ ও নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ব্যবহার কমেছিল কাটোয়া শহরে। ক্রেতারাও ব্যাগ হাতে বাড়ি থেকে বাজারে আসার অভ্যাস রপ্ত করেছিলেন। বিক্রেতারাও পুরু ক্যারিব্যাগে জিনিস দেওয়া শুরু করেছিলেন। পুরসভার তরফে বাড়ি বাড়ি চটের ব্যাগ বিলি হয়েছিল। কিন্তু ফের সেই পুরনো ছবি দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। নজরদারির ঢিলেমিকেই এর কারণ বলে মনে করছেন এলাকাবাসীর একাংশ। একই ছবি দেখা যাচ্ছে দাঁইহাটেও।
মুদির দোকান থেকে শুরু করে মাছের বাজার এবং আনাজ, ফল ও মিষ্টির দোকানে দেদার ফিনফিনে ক্যারিব্যাগের ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই সব ক্যারিব্যাগ নর্দমায় পড়ছে। ফলে নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা সচেতন বাসিন্দাদের। বিষয়টি নজরে এসেছে পুরসভারও।
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া ও দাঁইহাট শহর জুড়ে ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করার জন্য বছর দুয়েক আগে পুর-কর্তৃপক্ষ লাগাতার অভিযান চালিয়েছিলেন। ক্যারিব্যাগের সঙ্গে প্লাস্টিকের চায়ের কাপ, গ্লাস, থার্মোকলের পাতা ব্যবহার ও বিক্রি বন্ধে নোটিস জারি করা হয়েছিল। সেই সময়ে আচমকা নানা বাজারে অভিযান চালিয়ে প্রচুর ক্যারিব্যাগ ও নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের নানা সামগ্রী বাজেয়াপ্তও করা হয়েছিল। ফলে ধীরে ধীরে ক্যারিব্যাগের ব্যবহার অনেকটাই কমেছিল। ‘ক্যারিব্যাগ চাইবেন না’ এই মর্মে বিভিন্ন দোকানে পোস্টার ঝোলানো হয়েছিল।
কাটোয়া শহরের বাসিন্দা অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “ফিনফিনে ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করলে পরিবেশ দূষণ হয়। ব্যবহৃত ক্যারিব্যাগ নষ্ট হয় না। মাঝে এ সব সামগ্রীর ব্যবহার কমলেও ফের দোকানে, বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাতে ক্যারিব্যাগ ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। বর্ষায় সেগুলি নর্দমায় পড়লে নিকাশি ব্যবস্থার ক্ষতি হবে। বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দাইহাট বাজারের এক মুদি ব্যবসায়ীর দাবি, “প্রশাসনের কড়া নজরদারি চলার সময়ে ক্রেতারা ব্যাগ হাতে দোকানে আসছিলেন। এখন আবার তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে ক্রেতা ধরে রাখতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমাদের ক্যারিব্যাগ দিতে হচ্ছে। আমি না দিলে অন্য কোনও বিক্রেতা দিচ্ছেন। এটা পুরোপুরি বন্ধ হওয়া উচিত।”
কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। দূষণের হাত থেকে পরিবেশকে বাঁচাতে নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগ ও প্লাস্টিক ব্যবহার না করার অনুরোধ করব ক্রেতা-বিক্রেতাদের।” মহকুমাশাসক (কাটোয়া) অর্চনা পন্ধরিনাথ ওয়াংখেড়ে বলেন, “নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগ ও প্লাস্টিকের চায়ের কাপ, গ্লাস ব্যবহার আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। মানুষ সচেতন না হলে মুশকিল। এ নিয়ে আমরা কাটোয়া ও দাঁইহাটের পুর-প্রধানের সঙ্গে কথা বলে ফের প্রচার চালাব।”