উপরে, জামগ্রাম-সরিষাতলা রাস্তা অবরোধ। নীচে, নিমচা ফাঁড়িতে ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সাতটি কল রয়েছে এলাকায়। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র দু’টিতে জল পড়ে। এই পরিস্থিতিতে জেরবার বাসিন্দারা। অবশেষে পর্যাপ্ত পানীয় জলের দাবিতে বৃহস্পতিবার নিমচা ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখালেন তিরাট গোয়ালাপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশ। তবে দফতরের দাবি, অনেক ক্ষেত্রে জল ‘চুরি’র জন্যই এই অবস্থা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিরাট পঞ্চায়েতের তিরাট গোয়ালাপাড়ায় শ’দেড়েক পরিবারের বাস। বাসিন্দরা জানান, প্রায় তিন মাস ধরে পাড়ার পাঁচটি কলই নির্জলা। দু’টি কলের জলে পুরো পাড়ার সমস্যা মিটছে না। অন্যপাড়ায় গিয়ে জল আনতে হচ্ছে। তাতে সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা টুম্পা গোপ, চন্দনা দত্ত, প্রিয়ঙ্কা গোপদের অভিযোগ, “পড়শিপাড়ায় জল আনতে গেলে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কারণ আগে ওই পাড়ার লোকেরা জল নেবেন। তার পরে গোয়ালাপাড়ার বাসিন্দারা জল নিতে পারবেন।” অনেক সময় জল নেওয়া নিয়ে বচসাও বাধছে। সমস্যার সমাধানে পাড়ার বাসিন্দারা তৃণমূল পরিচালিত তিরাট পঞ্চায়েতের স্থানীয় সদস্যের কাছে বার বার আর্জি জানিয়েছেন বলে দাবি। পঞ্চায়েত অফিসেও বেশ কয়েক বার দাবিপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বাড়ি-বাড়ি জল দেওয়ার দাবিতে এলাকার মহিলাদের নেতৃত্বে তিরাটে দামোদর নদের ধারে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলপ্রকল্প ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। এ দিনও নিমচা ফাঁড়িতে মহিলাদের নেতৃত্বে বিক্ষোভের পরে সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিককে দাবিপত্র দেওয়া হয়।
তবে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মলয় মণ্ডলের দাবি, “জল সরবরাহের দায়িত্ব জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের। সমস্যা মেটাতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা পঞ্চায়েতকে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর।” যদিও, দফতরের ‘রানিগঞ্জ কোলফিল্ড এরিয়া ১-এর ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত রায় জানান, ওই পাড়াটির আগেই বেশ কিছু পরিবার জল সরবরাহের পাইপলাইনে ছিদ্র করে পাম্পের সাহায্যে জল টেনে নিচ্ছে। ফলে, এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। প্রশাসনকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য বলা হয়েছে। তাঁর সংযোজন: “মাইথনের পাশে কল্যাণেশ্বরীতে নতুন জলপ্রকল্প তৈরি হচ্ছে। প্রকল্পটি থেকে রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া ও পাণ্ডবেশ্বরের একাংশে যেখানে এ ধরনের জল সমস্যা আছে, সেখানে জল পাঠানো হবে।”
এ দিকে, পানীয় জলের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বারাবনির জামগ্রাম পঞ্চায়েতের সরিষাতলি এলাকার কয়েকশো বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে থেকে শুরু হয় জামগ্রাম-সরিষাতলি রাস্তা অবরোধ। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত এক মাস ধরে তাঁরা প্রবল পানীয় জলের সঙ্কটে ভুগছেন। গত মাসেও তাঁরা জলের দাবিতে অবরোধ-বিক্ষোভ করেছিলেন। বাসিন্দাদের দাবি, তখন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের তরফে জলের সঙ্কট মেটাতে সাত দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুরাহা হয়নি। এ দিন ফের অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন জামগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কেশব রাউত। তিনি অবরোধ তুলে নেওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু পরিস্থিতি না বদলালে সিদ্ধান্ত থেকে সরবেন না বলে জানিয়ে দেন বাসিন্দারা। সন্ধ্যায় অবশ্য বিক্ষোভকারীরা বাড়ি ফিরে যান। শুক্রবার থেকে তাঁরা ফের বিক্ষোভ দেখাবেন বলে জানিয়েছেন। কেশব জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতের কিছু এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট রয়েছে। এই সমস্যা দ্রুত মেটানোরব্যবস্থা করা হচ্ছে।