মাস খানেক বাদেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে শুক্রবার মন্তেশ্বরের ব্লকে সংগঠনে বড়সড় রদবদল করল তৃণমূল। ছেঁটে ফেলা হয়েছে সাতটি পঞ্চায়েত এলাকার সভাপতিদের। রাজনৈতিক মহলের দাবি, দলের অন্দরে গোষ্ঠী-কোন্দলে রাশ টানতেই এই পদক্ষেপ শাসক দলের।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দেনুড়, শুশুনিয়া, জামনা, মধ্যমগ্রাম, ভাগড়া, কুসুমগ্রাম ও মন্তেশ্বরে এই রদবদল হয়েছে। দেনুড়ে চন্দ্রকান্ত চৌধুরীর জায়গায় বাপ্পাদিত্য রায়, শুশুনিয়াই প্রশান্ত যশের স্থানে পার্থ ঘোষ, জামনায় অসিত দাঁর পদে লালন শেখ, মধ্যমগ্রামে সুমন্ত রায়ের জায়গায় হুমায়ুন কবির বড়া এসেছেন। এ ছা়ড়া ভাগড়ায় সিদ্ধার্থ ঘোষের জায়গায় আরোজ শেখ, কুসুমগ্রামে সফিক শেখের জায়গায় বাবলু খান ও মন্তেশ্বরে সুজিত ভট্টাচার্যর পদে চন্দনকুমার মণ্ডলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
কেন রদবদল? প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বর ব্লকে মোট ১৩টি পঞ্চায়েত রয়েছে। সবকটিরই ক্ষমতায় তৃণমূল। তবে তৃণমূল সূত্রেই খবর, দীর্ঘ দিন ধরে এই এলাকায় দলে কোন্দল রয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে মাঝেসাঝে তা প্রকাশ্যেও এসেছে। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, কোন্দল এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে গত বিধানসভা নির্বাচনে এই এলাকায় মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল জেলা, এমনকী রাজ্য স্তরের নেতৃত্বকেও। এমনকী নির্বাচনী সাফল্যের পরেও সেই কোন্দলে রাশ টানা যায়নি। সমস্যা সমাধানে এই এলাকার নেতাদের নিয়ে কখনও জেলায়, কখনও বা কলকাতায় বৈঠক হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কোন্দলের গোড়ায় রয়েছে পঞ্চায়েত স্তরের রাজনীতি। সামনের ভোটে সেই কোন্দল যাতে প্রভাব না ফেলে, তার জন্যই রদবদলের পদক্ষেপ বলে মত তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, রদবদলের প্রক্রিয়া মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নির্দেশে ব্লকের ১১ জন নেতাকে নিয়ে তৈরি হয় একটি কমিটি। সেই কমিটির সুপারিশে এই রদবদল হয় বলে জানা গিয়েছে। পুজোর আগে এই তালিকা চূড়ান্তও হয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে।
যদিও গোষ্ঠী কোন্দলে রাশ টানতে এই রদবদল, তা স্বীকার করেননি মন্তেশ্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি আজিজুল হক। তাঁর দাবি, ‘‘কোথাও কোন্দল নেই। পঞ্চায়েতের আগে সংগঠনকে আরও মজবুত করতেই এই পদক্ষেপ।’’ তবে এই রদবদলের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করে মন্তেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক সৈকত পাঁজা বলেন, ‘‘এই প্রথম শুনলাম বিষয়টা। বাবার বাৎসরিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি।’’ তবে যাঁদের পদ গিয়েছে, তাঁদের এক জন অসিতবাবু এ দিন বলেন, ‘‘শুনেছিলাম কয়েক জনকে সরানো হবে। দল কিছু জানাক। তার পরে এ নিয়ে মুখ খুলব।’’