রণডিহায় এলাকাবাসীর বিক্ষোভ। (ইনসেটে) নিহত সানি বাগদি। নিজস্ব চিত্র।
বাড়ি থেকে পাঁচশো মিটার দূরে বস্তাবন্দি অবস্থায় সানি বাগদি (৭) নামে এক বালকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। রবিবার সকালে বুদবুদের রণডিহার ঘটনা। এই ঘটনায় সানির বাবা দেবজিৎবাবু তিন জন আত্মীয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছেন। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের মধ্যে নীলু বাগদি নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দু’জনকে আটক করা হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধান মিলছিল না সানির। এর পরে রাতে বুদবুদ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। দেবজিৎবাবুর দাবি, ‘‘পাশেই আত্মীয় নীলু বাগদির বাড়ি। সেখানে খেলতে যাচ্ছি বলে সকাল ১১টা নাগাদ বেরিয়েছিল ছেলে। দুপুর পর্যন্ত ছেলে না ফেরায়, ওই বাড়িতে খোঁজ নিই। বলা হয়, সানি ওখানে যায়নি।’’
এ দিকে, স্থানীয়দের একাংশ পুলিশকে জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে খোঁজ মিলছিল না নীলুর। পুলিশকে সে কথা জানান দেবজিৎবাবুও। পুলিশ জানায়, শনিবার গভীর রাতে নীলুকে বাড়ি থেকেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় তাঁদের কাছে নীলু যা বলেছিল, সেই সূত্র ধরে রবিবার রণডিহা ড্যামে যাওয়ার রাস্তার পাশে বস্তাটি পড়ে থাকতে দেখা যায়।
ইতিমধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায় এলাকায়। সেই মতো, এলাকাবাসীর একাংশ দেবজিৎবাবুর বাড়ি চলে আসেন। পাশাপাশি, বস্তাবন্দি দেহের খবর পেয়ে এলাকাবাসীর একাংশ পুলিশের গাড়ি আটকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁরা দাবি করতে থাকেন, অভিযুক্তদের ঘটনাস্থলে আনতে হবে। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশের বড় বাহিনী এবং কমব্যাট ফোর্স। পরে পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভ থামে। দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। অভিযুক্তদের বাড়িতে এলাকাবাসীর একাংশ ভাঙচুর চালান বলেও অভিযোগ উঠেছে।
তদন্তকারীদের দাবি, নীলু জেরায় তাঁদের কাছে জানিয়েছে, পারিবারিক অশান্তির জেরেই সানিকে খুন করা হয়েছে। তবে, নিহতের বাবা দেবজিৎবাবুর দাবি, ‘‘কোনও অশান্তি ছিল না।’’ সানি রণডিহা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল। স্কুলের শিক্ষক তথা স্থানীয় বাসিন্দা অরূপ জানা বলেন, ‘‘খুবই শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল সানি। জানি না, কেন এই ঘটনা।’’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (কাঁকসা) শাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত বলেন, ‘‘পারিবারিক শত্রুতার জেরে এই খুন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃত ও অন্য দুই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’