কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ামককে ঢুকতে বাধা। নিজস্ব চিত্র।
অচলাবস্থা কাটেনি আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিক্ষোভ-অবস্থানের পাশাপাশি এ বার রিলে অনশন শুরু করেছেন পড়ুয়ারা। বিক্ষোভের জেরে শুক্রবার নিয়ামক চন্দন কোনার বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পারেননি বলে অভিযোগ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) হুঁশিয়ারি, আইনি খরচের টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ-অবস্থান চলবে।
গত ৮ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সদর দরজায় তালা ঝুলিয়ে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেছেন পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে আইনি খরচ বাবদ প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে ফেরত দিতে হবে। টিএমসিপি নেতৃত্বের দাবি, কখন, কোথায়, কী কারণে এই টাকা খরচ করা হয়েছে— তা শ্বেতপত্র প্রকাশ করে উপাচার্যকে জানাতে হবে। বিক্ষোভ-অবস্থান শুরুর পরে শুক্রবারই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন নিয়ামক চন্দন কোনার। কিন্তু পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলগেট আটকে বিক্ষোভ দেখানোয় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই ঢুকতে পারেননি। রাস্তায় গাড়ি রেখে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। বিক্ষোভকারীরা তাঁকে জানিয়ে দেন, আইনি খরচ বাবদ ব্যয় হওয়া টাকা আগে তহবিলে ফেরত দিতে হবে। কোথায় কবে কেন এই টাকা খরচ করা হয়েছে, তার বিস্তারিত বিবরণ-সহ উপাচার্যকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। তবেই তাঁকে ও উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে। প্রায় ২০ মিনিট বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে অপেক্ষা করার পরে ফিরে যান চন্দন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে না পারার কথা স্বীকার করলেও অন্য কোনও বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি চন্দন। এ দিনও উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, অবস্থান-বিক্ষোভের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার থেকে পড়ুয়ারা রিলে অনশন শুরু করেছেন। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায় বলেন, “উপাচার্য আসছেন না। তিনি নিয়ম ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি নিয়ে চলে গিয়েছেন। আমরা এই বেনিয়মের প্রতিবাদেও আন্দোলনে নেমেছি।”
এরই মধ্যে এ দিন সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে খবর রটে যায় উপাচার্য না কি রাজ্যপালের কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। উপাচার্য দেবাশিসের দাবি, এই খবর গুজব। তিনি পদত্যাগের কোনও সিদ্ধান্তই নেননি। এ দিনও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। কয়েক জন কর্মী প্রশাসনিক ভবনে কাজে যোগ দিতে এলে তাঁদেরও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।