Crimes at Industrial sites

শিল্পতালুকের জমি পড়ে, বাড়ছে দুষ্কর্মও

এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, জল, বিদ্যুৎ, রাস্তা কোনও কিছুরই তেমন ব্যবস্থা নেই। সীমানা পাঁচিলের ইট বহু জায়গায় খসে পড়েছে। কিছু কিছু জায়গায় চাষ হয়েছে নানা ধরনের আনাজ।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৩৫
Share:

শিল্পতালুকের জন্য পড়ে থাকা জমি। নিজস্ব চিত্র।

তিন দশকেরও আগে শিল্পতালুক গড়ার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল কালনার সাতগাছি পঞ্চায়েতের বারাসত মৌজায়। শুরুতে কয়েক জন আগ্রহ দেখালেও সেই জমির বেশির ভাগই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কোথাও মাথা তুলেছে ঘন বনজঙ্গল। আবার কোথাও চলেছে পেঁপে, ফুলকপি, পটলের মতো আনাজ চাষ। শিল্পতালুকের জন্য চিহ্নিত জমি বেআইনি ভাবে দখল হয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ।

Advertisement

১৯৯১ সালে পাকা রাস্তার পাশে ওই এলাকায় শিল্পতালুক গড়ার জন্য জেলা পরিষদের তরফে সাত একর ৭৭ শতক জমি চিহ্নিত করা হয়। এলাকায় শিল্প হলে বহু মানুষের কর্মসংস্থানের আশায় নূর মহম্মদ খাঁ, মুবারক আলি খাঁ, তুলসীরাম সরকার, যোগেশচন্দ্র সেনদের মতো অনেকেই জমি দেন। বছর চারেক পরে জমির দামও পান তাঁরা। শিল্পতালুকের ওই জমি পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বর্তমানে শিল্পতালুকের জমিতে রয়েছে শুধু একটি মুড়ির মিল। একটা বড় পিচবোর্ড তৈরির কারখানা তৈরি হলেও দু’হাজার সালের বন্যার পরে সেটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মালিকপক্ষ আর কারখানা চালু করেননি।

এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, জল, বিদ্যুৎ, রাস্তা কোনও কিছুরই তেমন ব্যবস্থা নেই। সীমানা পাঁচিলের ইট বহু জায়গায় খসে পড়েছে। কিছু কিছু জায়গায় চাষ হয়েছে নানা ধরনের আনাজ। যেখানে পিচবোর্ড কারখানা ছিল সেখানে কংক্রিটের মেঝে এবং চিমনির একাংশ পড়ে রয়েছে।বেশির ভাগ এলাকা ঢেকে গিয়েছে ঘন বনজঙ্গলে। মাটি চুরিরও অভিযোগ উঠেছে ওই এলাকা থেকে। জমি দখল করে অনেকে বসবাসও করছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

শিল্পতালুকের জমিতে পেঁপে গাছের পরিচর্যা করতে করতে এলাকার বন্দেবাজ গ্রামের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ সরকার বলেন, ‘‘শিল্পতালুক ঘিরে এলাকার মানুষের অনেক স্বপ্ন ছিল। সবাই ভেবেছিল, শিল্প এলে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। কিছুই হল না। পড়ে থাকা জমিতে কিছু ফসল ফলিয়ে রোজগারের চেষ্টা করি।’’ তাঁর দাবি, বেশ কয়েক বার সরকারি আধিকারিকেরা শিল্পতালুকের জমি পরিদর্শন করে গিয়েছেন। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। যত দিন গিয়েছে তত আগাছা বাড়ছে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, পড়ে থাকা জমিতে দুষ্কর্ম বাড়ছে। নেশার উপকরণ নিয়ে আসাযাওয়া বাড়ছে। জমিদাতাদের অনেকেও হতাশ। আবুল হাসমৎ খান নামে এক জন বলেন, ‘‘জমির দাম কমই পেয়েছিলাম। ঠিক হয়েছিল, প্রত্যেক জমিদাতার পরিবারের দু’জনকে চাকরি দেওয়া হবে। শিল্পতালুক না হওয়াই কেউ চাকরি পায়নি।’’

কালনা ২ ব্লক থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদের সদস্য দেবু টুডু বলেন, ‘‘শিল্পতালুকের জমিতে যাতে ছোট এবং মাঝারি শিল্প হয়, তার জন্য ওই জমি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরকে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চেষ্টা চলছে, ওখানে কিছু করার।’’ সাতগাছি পঞ্চায়েতের প্রধান হরেকৃষ্ণ মণ্ডলেরও বক্তব্য, ‘‘ওখানে দ্রুত কিছু করার দরকার রয়েছে। না হলে দখলদারি বাড়তেই থাকবে। ছোট ছোট শিল্পের জন্য ওই এলাকার জমি চেয়ে ব্যবসায়ীরা পঞ্চায়েতকে আবেদন করলে জেলা পরিষদকে বিষয়টি জানানো হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement