প্রতীকী ছবি।
চড়কের মেলা দেখতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেছিল বছর ষোলোর কিশোরী। তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মোটরবাইকে তুলে নিয়ে গিয়ে আউশগ্রামের বননবগ্রামের জঙ্গলের ভিতর দুজন যুবক ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। রবিবার রাতে ওই ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা রক্তাক্ত অবস্থায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন। পরে পুলিশ এসে ওই নাবালিকাকে স্থানীয় ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালে চিকিৎসা করায়। রাতেই বর্ধমান শহর লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরী আউশগ্রাম থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, “পসকো আইনে গণধর্ষনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ওই কিশোরী অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবকের নামে অভিযোগ জানিয়েছেন। আমারা তদন্ত শুরু করেছি। এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হননি। আমরা অভিযুক্তদের ছবি আঁকানো যায় কি না দেখছি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আউশগ্রামের যাদবগঞ্জে ফি বছর চড়কের মেলা বসে। মেলায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের আদিবাসীরা হাজির হন। এমনকী, ভিন রাজ্য থেকেও আদিবাসীরা আসেন। চার-পাঁচ দিন ধরে রাতভর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও চলে। রবিবার বর্ধমান শহর লাগোয়া একটি গ্রাম থেকে কয়েকজন বান্ধবী ও আত্মীয়দের সঙ্গে ওই মেলা দেখতে গিয়েছিল দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী। পুলিশের কাছে সে জানিয়েছে, ভিড়ের মধ্যে থেকে সে দলছুট হয়ে যায়। মেলার মাঠ থেকে কিছুটা দূরেই তাঁর আত্মীয়ের বাড়ি। তাঁর অভিযোগ, “পরিচিত কাউকে দেখতে না পেয়ে ঘাবড়ে গিয়ে মেলার মাঠের ধারে কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছিলাম। সেই সময় ওই দুই যুবক আমাকে আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছে দেবে বলে মোটরবাইকে চাপায়। কিন্তু আত্মীয়ের বাড়ির বদলে জঙ্গলের ভিতর নিয়ে গিয়ে আমার সঙ্গে নোংরামি করে।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বননবগ্রামের জঙ্গলে একটি পুকুরপাড়ে ওই কিশোরীকে ফেলে পালিয়ে যায় ওই যুবকেরা। মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ পরে ছিল। ওই অবস্থাতেই কোনও রকমে রাস্তার কাছে এলে স্থানীয় কয়েকজন তাকে বসিয়ে রেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে ওই কিশোরীকে স্থানীয় ব্লক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখান থেকে গভীর রাতে থানায় নিয়ে আসে। কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ করার পরে পুলিশ তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়। পুলিশের দাবি, ওই কিশোরী জানিয়েছে অভিযুক্ত দু’জন এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছে। নির্যাতন করার সময় সে চিৎকার করলে তারা পালিয়ে যায়। ওই যুবকদের দেখলে সে চিনতে পারবে বলে পুলিশকে জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: কাঠুয়া ধর্ষণ মামলায় মুফতি সরকারের অবস্থান কী, জানতে চাইল আদালত
সোমবার ওই কিশোরীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পুলিশের দাবি, পরীক্ষা করাতে রাজি হয়নি ওই কিশোরী। পরে বর্ধমান আদালতে গোপন জবানবন্দী দিয়েছে নির্যাতিতা কিশোরী।
আরও পড়ুন: সুরাত: আটকে রেখে ধর্ষণ করেই খুন