রমেশ রক্ষিত। —নিজস্ব চিত্র।
তলানিতে নেমে যাওয়া মনোবল নিয়ে আইটিআই পড়তে আসা ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠা হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে এসেছেন এতদিন। দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট আইটিআই কলেজের অটোমেশন বিষয়ক পিএলসি ল্যাবের মাস্টার ট্রেনার সেই রমেশ রক্ষিতকে এ বার জাতীয় শিক্ষকের জন্য নির্বাচন করেছে কেন্দ্রের ‘মিনিস্ট্রি অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এন্টারপ্রেনর’। বৃহস্পতিবার রাতে ই-মেলে সেই খবর আসার পরেই উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে রমেশের গ্রাম বাঁকুড়ার সোনামুখীর রাধাবিনোদপুরেও।
১৯৯৫ সালে বাঁকুড়া সম্মিলনী কলেজ থেকে বিএসসি এবং ১৯৯৮ সালে বিষ্ণুপুরের কেজি ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেন রমেশ। দীর্ঘদিন বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে ২০১০ সালে তিনি গড়িয়াহাট আইটিআইয়ে ইনস্ট্রাকটর হিসাবে যোগ দেন। ২০১৮ সালে ইনস্ট্রাক্টর ইলেকট্রিশিয়ান পদে যোগ দেন দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট আইটিআই কলেজে।
স্ত্রী ও দশম শ্রেণির পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে বর্তমানে দুর্গাপুরে থাকেন রমেশ। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা আইটিআই পড়তে আসেন, তাঁদের অনেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফল করতে না পেরে মনোবল তলানিতে থাকে। আমি তাঁদের মনে সাহস জোগাই। ওদের বোঝাই, এখান থেকেই তোমরা জীবনে উচ্চ প্রতিষ্ঠিত হতে পার। সমস্ত সরকারি পরীক্ষার জন্য ওদের তৈরি করে দিই।’’ তাঁর হাতে তৈরি বহু ছাত্রছাত্রী এখন ডিআরডিও, সেল, রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ-সহ নানা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় কাজ করছেন। গড়িয়াহাটে তাঁর এক শিক্ষার্থী অল ইন্ডিয়া স্কিল কম্পিটিশনে প্রথম হয়েছিলেন।
তাঁর সহকর্মী সুদীপরঞ্জন ঘোষ জানান, করোনার সময় আনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের জন্য ইউটিউবে ভিডিয়ো করতেন রমেশ। এখনও ছাত্রছাত্রীদের জন্য ইউটিউবে ভিডিয়ো তৈরি করে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের পাঠ দেন। কলেজের অধ্যক্ষ অরিন্দম আচার্য বলেন, ‘‘আমাদের দেশকে বিশ্বে ‘স্কিল ক্যাপিটাল’ হিসাবে গড়ে তুলতে গেলে ওঁর মতো দক্ষ মানুষের ভূমিকা অনস্বীকার্য।’’