রাজু ঝা খুনে এই নীল গাড়ি ঘিরেই ঘনাচ্ছে রহস্য। — নিজস্ব চিত্র।
কয়লা কারবারি রাজেশ ঝা ওরফে রাজু খুনে আততায়ীদের স্কেচ আঁকাল পুলিশ। সোমবার দুপুর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে রাজু যে গাড়িতে ছিলেন তার চালক শেখ নুর হোসেন এবং ওই গাড়ির আরোহী ব্রতীন মুখোপাধ্যায়কে। এর পর তাঁদের দেওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করে আঁকানো হয়েছে স্কেচ। সেই স্কেচের সূত্র ধরে সন্ধান চলছে হত্যাকারীদের।
পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বেলা ৩টের সময় ব্রতীনকে নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ সুপারের দফতরে। এর পর বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় শেখ আব্দুল লতিফের গাড়ির চালক শেখ নুর হোসেনকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পর দীর্ঘ ক্ষণ ধরে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁদের দু’জনকে। তাঁদের দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে দুই আততায়ীর ছবি আঁকানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। রাত ৮টা ৫০ মিনিট নাগাদ একই গাড়িতে চড়ে বেরিয়ে যান ব্রতীন এবং নুর হোসেন।
শনিবার রাতে শক্তিগড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রাজুকে গুলি করে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় জখম হন ব্রতীনও। তাঁর হাতে গুলি লাগে। এর পর তিনি ভর্তি ছিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান ব্রতীন। তার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে বর্ধমানে জেলা পুলিশের সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ব্রতীন দাবি করেন, তিনি লতিফকে চেনেন না। শুধু তা-ই নয়, গাড়িতে চালক-সহ মোট ৩ জন ছিলেন বলেও জানান তিনি। কিন্তু গাড়িচালক নুর হোসেন অভিযোগপত্রে যা লিখেছেন তাতে স্পষ্ট ওই একই গাড়িতে ছিলেন লতিফও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নুর এবং ব্রতীনের বয়ানে এই অসঙ্গতিই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পেশাদার খুনি (সুপারি কিলার) ভাড়া করে রাজুকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। পুলিশের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শনিবার ভোরে একটি নীল রঙের গাড়ি গিয়েছিল ঝাড়খণ্ডে। দুপুরে সুপারি কিলারদের নিয়ে সেই গাড়িটি পৌঁছয় দুর্গাপুরে। বিভিন্ন জায়গার সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে এবং নীল রঙের গাড়িটির নম্বর মিলিয়ে তদন্তকারীরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন বলে পুলিশের ওই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের মতে, রাজু খুনে ব্যবহার করা হয়েছিল সেই নীল গাড়িটিই। যদিও সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।