রাজু ঝা। ফাইল চিত্র।
শক্তিগড়ে কয়লা ব্যবসায়ী রাজু ঝা খুনের তদন্তে এখন চাবিকাঠি তাঁর সঙ্গী ব্রতীন মুখোপাধ্যায়। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অন্তত তেমনটাই উঠে আসছে।
শনিবার রাতে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রাজুকে গুলি করে খুনে ঘটনায় জখম হয়েছিলেন ব্রতীনও। তার পর তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন ব্রতীন। হাসপাতালের সুপার তাপস দাস জানান, অস্থি চিকিৎসকেরা ব্রতীনকে দেখার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ব্রতীনকে বর্ধমানে জেলা পুলিশের সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ঘটনার দিন রাতে যে গাড়িতে রাজু ছিলেন, সেই সাদা এসইউভি-তে কত জন ছিলেন, ৩ না ৪— এই নিয়ে ধন্দে জেলা পুলিশের কর্তারা। এর মধ্যেই সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো (সেটির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি) প্রকাশ্যে আসে। সেই ভিডিয়োয় গাড়িটির সামনে গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের খাতায় পলাতক শেখ আব্দুল লতিফকে দেখা গিয়েছে। গাড়িটি যে লতিফেরই, তা শনিবার রাতেই জানা গিয়েছিল। প্রশ্ন উঠছে, ভিডিয়োটি যদি ঘটনার রাতেরই হয়, তবে রাজু ও লতিফ এক সঙ্গে কোথায় যাচ্ছিলেন? ঘটনার পরে লতিফ উধাও হলেনই বা কী করে? এ নিয়ে জল্পনার মধ্যেই পুলিশ সূত্রে খবর মিলেছে, রাজুর গাড়ির চালক নুর হোসেন জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন, গাড়িতে তিনি-সহ ৪ জন ছিলেন। তার থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি ওই চতুর্থ ব্যক্তি লতিফ?
ব্রতীন অবশ্য সোমবার হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দাবি করেন, তিনি লতিফকে চেনেন না। শুধু তা-ই নয়, গাড়িতে চালক-সহ মোট ৩ জন ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নুর এবং ব্রতীনের বয়ানে এই অসঙ্গতিই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। এই বিষয়টি নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতেই ব্রতীনকে জেলা পুলিশের দফতরে নিয়ে আসা হয়েছে। রাজু খুনের তদন্তে রবিবার জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেনের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সদর) কল্যাণ সিংহরায়ের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের যে সিট গঠন করা হয়েছে, সেই সিটের সদস্যেরা ব্রতীনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। পুলিশ সূত্রের আরও দাবি, ব্রতীনকে আলাদা ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন জেলা পুলিশ সুপার।
কামনাশিস বলেন, ‘‘সিট তদন্ত করছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সূত্রের হদিস মিলেছে। আশা করছি, শীঘ্রই খুনের কিনারা করতে পারব আমরা।’’