জমিতে এই মুহূর্তে এমনই জল জমে রয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
কয়েক দিন নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এমনিতেই কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমানে। আর এই বৃষ্টির ফলে, আমন ধান চাষের কাজও শুরু হয়েছে বলে চাষিরা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, বীজতলা তৈরি, বীজ ফেলার মতো কাজগুলি হয়েছে কিছু ক্ষেত্রে। জলের সমস্যাও অনেকটা মিটেছে। তবে কৃষি দফতর জানিয়েছে, বেশি বৃষ্টি হলে তিল ও আনাজ চাষে ক্ষতি হতে পারে।
জেলায় চাষযোগ্য জমির পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর। গত বার প্রায় ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা গিয়েছিল। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় সেচযোগ্য জমির পরিমাণ প্রায় ন’হাজার হেক্টর। ফলে, বর্ষার উপরেই নির্ভরশীল বেশির ভাগ জমির কৃষিকাজ।
কিন্তু এই বৃষ্টি ও নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি হলে লাভ কেন দেখছেন চাষিরা? তাঁরা জানান, আমন ধান চাষের জন্য এই সময়ে বহু চাষিই মাঠে শুকনো অবস্থায় বীজ ফেলেন। যাতে বর্ষায় বৃষ্টির পরিমাণ ঠিক থাকলে সহজেই জমিতে সেই চারা রোওয়া যায়। কিন্তু অনেক সময়ে বৃষ্টি কম হলে বীজতলা শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই আগেভাগে বৃষ্টি হলে কাদাতেই বীজতলা তৈরির সুযোগ পাওয়া যায়। চাষিরা জানান, বীজতলায় বীজ ফেলা থেকে তা বড় করে অন্য জমিতে রোপণ করার মধ্যে ২৫ দিন সময়ের ব্যবধান থাকে। এ বছর প্রায়ই বৃষ্টি হওয়ার ফলে, জমিতে জল রয়েছে। তাই, আমন ধান চাষে সুবিধা হচ্ছে।
কাঁকসার চাষি শিবপ্রসাদ রাউত, তপন ঘোষেরা বলেন, ‘‘সময়ে চাষ করতে পারলে ফলন ভাল হয়। এ বার যা পরিস্থিতি তাতে আমন ধানের চাষ ভাল হবে বলেই মনে হচ্ছে। বৃষ্টি বেশি হলে জমিতে জল জমে থাকবে। ফলে, বোরো ধানের নাড়া, খড় সহজেই পচে যেতে পারবে। এটি জমির পক্ষে ভাল।’’ একই কথা জানিয়েছে কৃষি দফতরও।
তবে অধিক বৃষ্টি হলে তিল গাছ এবং আনাজ চাষে ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা কৃষি দফতরের। সে ক্ষেত্রে, জমিতে যাতে জল না জমে সে দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চাষিদের। জেলার উপ-কৃষি আধিকারিক সাগর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। চাষিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’’