Indian Railways

সব ভাঙা পড়লেও তৃণমূল কার্যালয় অক্ষত, বিতর্কে রেল

রেল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া স্টেশনের ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সামনে কাটোয়া-বর্ধমান রোডের পাশেই রেলের বড়সড় জায়গার উপরে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে কুলিদের বস্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৪ ০৮:২০
Share:

এই তৃণমূল কার্যালয় নিয়ে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।

দিন পনেরো আগে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছিল কাটোয়ার রেল কুলিবস্তিতে। পঞ্চাশ থেকে ষাট বছর ধরে থাকা রেলের কুলিদের যাবতীয় ঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। রেলের জায়গা দখল করে থাকা একটি ক্লাব ও সিপিএমের কার্যালয়ও ভাঙ হয়। কিন্তু, অক্ষত হয়েছে রাজ্যের শাসক দলের পার্টি অফিসটি। তৃণমূল নেত্রীর ছবি থেকে শুরু করে দলীয় পতাকা সোমবারও উড়তে দেখা গিয়েছে।

Advertisement

বিরোধীদের অভিযোগ, নিয়ম সবার ক্ষেত্রেই সমান হওয়া উচিত। কিন্তু তৃণমূল বলেই নরম হয়েছে রেল। সিপিএম রেল দফতরকে এ নিয়ে চিঠি দিয়েছে। বিজেপির দাবি, রেলের আধিকারিকদের একাংশ তৃণমূলের সঙ্গে সখ্যতা রেখে চলতে চাইছেন। যদিও কোনও অভিযোগ মানেননি রেল কর্তৃপক্ষ। তৃণমূলের কার্যালয়টি সময় মতো ভাঙা হবে বলেও জানানো হয়েছে। তৃণমূল অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।

রেল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া স্টেশনের ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সামনে কাটোয়া-বর্ধমান রোডের পাশেই রেলের বড়সড় জায়গার উপরে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে কুলিদের বস্তি। প্রায় ৫০টি পরিবার সেখানে থাকত। বেশ কয়েকটি ক্লাবের পাশাপাশি সিপিএম ও তৃণমূলের কার্যালয়ও রয়েছে। গত পনেরো দিন আগে রেল দফতর থেকে উচ্ছেদ অভিযান চালান হয়। বুলডোজার দিয়ে রীতিমতো প্রত্যেকটি ঝুপড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। শুধু তৃণমূল কার্যালয়টি ভাঙা হয়নি। সোমবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে করগেটের টিন, ইট থেকে শুরু করে ভাঙাচোরা জিনিস। সিপিএমের পার্টি অফিসটির বিন্দুমাত্র চিহ্নও নেই। তবে পাশে তৃণমূলের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে বসে রয়েছেন বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী।

Advertisement

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “রেলের তরফ থেকে উচ্ছেদের জন্য আগেই নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু, গরিব কুলিরা কোথাও যেতে পারেননি। দিন পনেরো আগে রেলের কর্তারা পুলিশ নিয়ে এসে বস্তির প্রায় ৫০টি ঘর ভেঙে দেন। পরিবারগুলি আশ্রয়হীন।’’

পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপি সভাপতি (কাটোয়া সাংগঠনিক) গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রেল নিজের প্রয়োজনে উচ্ছেদ করতেই পারে। কিন্তু, কাটোয়ায় রেলের কয়েকজন আধিকারিক রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে সমঝোতা করেই চলেন। সে জন্য বস্তি উচ্ছেদ হলেও একই সীমানায় থাকা তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙা হয় না। আমি রেলমন্ত্রীকে চিঠি দেব।’’ কাটোয়ার প্রবীণ সিপিএম নেতা সুজিত রায় বলেন, “রেলের এই দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। গরিব কুলিদের মাথার আচ্ছাদন কেড়ে নেওয়া হল। আমাদের দলের কার্যালয়টিও ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল। অথচ, তৃণমূলের অফিসটি বহাল তবিয়তে আছে। রেল কর্তৃপক্ষকে প্রতিবাদ পত্র পাঠিয়েছি।’’

পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কাটোয়া স্টেশন ম্যানেজার কল্যাণ সেন বলেন, “উচ্ছেদের ক্ষেত্রে আমরা কোনও পক্ষপাত করিনি। শীঘ্রই দ্বিতীয় দফায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। সেই সময় রেলের জায়গায় থাকা বাকি নির্মাণও ভেঙে দেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement