এই এলাকা থেকেই উদ্ধার হয়েছে রেলকর্মীর দেহ। নিজস্ব চিত্র
রেলের গুদামঘর লাগোয়া ঝোপ থেকে চন্দ্রদেও পাসোয়ান (৫৫) নামে এক রেলকর্মীর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। বুধবার রাতে কুলটি থানার চিনাকুড়ির ঘটনা। পরিবার খুনের অভিযোগ করেছে। বৃহস্পতিবার আসানসোল জেলা হাসপাতালে দেহটির ময়না-তদন্ত করিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে পুলিশ খবর পায়, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের রাধানগর রেল সাইডিং লাগোয়া গুদামঘরের কাছে এক ব্যক্তির দেহ পড়ে রয়েছে। কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের পরিবারের সদস্যদের দিয়ে দেহটি শনাক্ত করিয়ে ফাঁড়িতে আনে। চন্দ্রদেও ওই গুদামঘরেই কর্মরত ছিলেন। তাঁর মাথায় ও পেটের ডান দিকে গুলি লেগেছে বলে তদন্তকারীরা জানান।
কেন এই ‘খুন’? বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ধোঁয়াশা রয়েছে বলে তদন্তকারীরা জানান। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গুদামঘর থেকে একশো মিটার দূরেই চন্দ্রদেওবাবুর নিজের বাড়ি। সেখানে স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে বসবাস করতেন তিনি। পুলিশ জেনেছে, গত কয়েকবছর ধরে বাড়ির সবার সঙ্গে কোনও বিষয়ে টানাপড়েন চলছিল চন্দ্রদেওবাবুর। তাই তিনি বাড়ির বদলে, ওই গুদামঘরেই থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক বিবাদের জেরে এই খুন হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক প্রৌঢ়কে আটকও করেছে পুলিশ। ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, সে বিষয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে।’’
নিহতের ছেলে প্রেম বলেন, ‘‘বাবা বাড়িতে আসতেন না। কাজের জায়গায় একাই থাকতেন। বুধবার রাতে পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরে, মৃত্যুর কথা জানতে পারি। আমি দেহ শনাক্ত করেছি। বাবার সঙ্গে এলাকার কারও কোনও শত্রুতা ছিল বলে জানি না।’’ তাঁর মা গত কয়েক দিন ধরে অসুস্থ থাকায় রেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলেও জানান প্রেম।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজা পাসোয়ান বলেন, ‘‘এমন ঘটনা আগে কখনও আমাদের এলাকায় দেখা যায়নি। বুধবার রাতে পুলিশ দেখে বুঝতে পারি, কিছু একটা ঘটেছে।’’ তবে চন্দ্রদেওয়ের বিষয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি পড়শিরা। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দাবি করেন, প্রায়ই দেখা যেত, সন্ধ্যা নামলেই ওই গুদামঘরে চন্দ্রদেওয়ের কাছে কয়েকজন বহিরাগতকে আসতে দেখা যেত। অভিযোগ, বসত
নেশার আসরও।
কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে রেলের গুদামঘরেই কী ভাবে থাকতেন এক জন রেলকর্মী? এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলেও কোনও মন্তব্য করতে চাননি রেল-কর্তারা।