রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে বাম এবং তৃণমূলের মধ্যে। ফাইল ছবি।
পুরসভার এক কর্মীকে বার বার চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও তিনি নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত কোনও নথি দেননি। পুরসভা জানিয়েছে নিজের নিয়োগের শিক্ষাগত নথি জমা দিতে না পারার জন্য মনিরুল ওরফে নাজির শেখ নামে ওই কর্মীকে বোর্ড অব কাউন্সিলরদের বৈঠকে অনুত্তীর্ণ (নন-কোয়ালিফায়েড) কর্মী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে তথ্য পাঠানো হয়েছে ‘ডেপুটি ডিরেক্টর অব লোকাল বডিজ়’ (ডিডিএলবি)-এর বর্ধমান ডিভিশনে।
যদিও ওই কর্মীর দাবি, নিয়োগের সময়ে তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র দিয়েছিলেন। সেগুলি হারিয়ে যাওয়ায় সমস্যা হয়েছে।
গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিষটিকে বাম আমলের দুর্নীতি বলে দাবি করেছেন কালনার প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র দেবপ্রসাদ বাগ।
তাঁর অভিযোগ, পুরসভার পুরনো নথি ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, বাম আমলে যখন মনিরুলের নিয়োগ হয়েছিল, তখন তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা লেখা ছিল অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ। দেবপ্রসাদের দাবি, ওই কর্মী অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে থাকলেও তার নথি দাখিল করতে পারতেন। নথি হারালে থানায় অভিযোগও করতেন।
সিপিএমের কালনা শহর লোকাল কমিটির সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, যে সময়ে ওই কর্মী চাকরিতে ঢুকেছিলেন, তখন গাড়ির চালকের মতো পদে পড়াশোনা না জানা থাকলেও চলত। ফলে, বাম আমলের দুর্নীতির প্রশ্ন ওঠে না।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৬ সালে ওই কর্মী গাড়িচালক পদে চাকরি পান। তিনি প্রধান করণিকের দফতরেও কাজ করছেন। এখন পুরসভার একটি পাম্পে কর্মরত। ২০১৯ সালে পোর্টালে পুরকর্মীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘আপলোড’ হয়। সেখানে ওই কর্মীর যোগ্যতা মাধ্যমিক উত্তীর্ণ লেখা হয়। মাঝে ওই কর্মী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার জন্য অনুমতি চেয়েছিলেন। সম্প্রতি কর্মীদের পদোন্নতি ও বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের সূ্ত্রে মনিরুলের শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়টি দেখা হয়। তাঁর ২০১৪-১৫ সালে মাধ্যমিক পাশের একটি শংসাপত্র মেলে। কিন্তু যে বেসরকারি সংস্থা সেটি দিয়েছে, তার এমন শংসাপত্র দেওয়ার এক্তিয়ারই নেই বলে ধরা পড়ে, দাবি পুরসভা সূত্রের।
মনিরুলের দাবি, ‘‘আমাকে যখন পুরসভা নিয়োগ করেছে, আমি নিশ্চয় শিক্ষাগত যোগ্যতার নথি দিয়েছিলাম। সে সব পুরসভায় ছিল। এখন হারিয়ে গিয়েছে শুনছি। ফের জোগাড় করছি।’’
তাঁর আরও দাবি, যেখানে মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন, সেই সময়ে সেটির সরকারি অনুমোদন ছিল বলে জানতেন। এখন শুনছেন তা নেই।
কালনার পুরপ্রধান আনন্দ দত্ত জানান, গোটা বিষয়টি নিয়ে ডিডিএলবি-র বর্ধমান ডিভিশনের তরফে যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা কর্মীকে জানানো হবে।