চুপি পাখিরালয়। নিজস্ব চিত্র
চুপির ছাড়িগঙ্গায় আসতে শুরু করেছে পরিযায়ী পখির দল। তাদের দেখতে ভিড় করছেন পর্যটকেরা। বাড়ানো হচ্ছে নজরদারি।
বহু বছর ধরে চুপির ছাড়িগঙ্গায় আসে পরিযায়ী পাখিরা। উত্তরবঙ্গের কিছু পাখিও দেখা যায়। তাদের ছবি তুলতে পর্যটকেরা নৌকা নিয়ে ঘোরেন জলাশয়ে। রবিবার কলকাতা থেকে আসা চিকিৎসক পল্লব সাহা বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি প্রজাতির পাখি এখনই চলে এসেছে। দ্রুত আরও পাখির ভিড় বাড়বে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মাঝে কয়েক বছর জলাশয়ে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমেছিল।’’ প্রশাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে বেড়ে যাবে পাখির সংখ্যা।
গত ৮ অগস্ট পাখিরালয়ে নৌকাডুবির ঘটনায় মৃত্যু হয় দু’জনের। নৌকার মাঝি-সহ তিন জনকে উদ্ধার করেন স্থানীয়েরা। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, মত্ত অবস্থায় কয়েক জন নাচানাচি করায় উল্টে গিয়েছিল নৌকা। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে, শীতের মরসুমের শুরুতে দুর্ঘটনা নিয়ে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। বিডিও (পূর্বস্থলী ২) সৌমিক বাগচি জানিয়েছেন, মত্ত অবস্থায় কেউ যাতে নৌকায় না ওঠেন, তা নজরে রাখা হচ্ছে। কাউকে মত্ত অবস্থায় দেখা গেলে পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে মাঝিদের। নৌকায় নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী তুলতে বলা হয়েছে। নৌকাবিহারের সময় পর্যটকদের লাইফ জ্যাকেট পরতে বলা হয়েছে।
বিডিও বলেন, ‘‘পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে পাখিরালয় সংলগ্ন পার্কটি আরও সুন্দর করার চেষ্টা হচ্ছে। পরিস্রুত পানীয় জলের জোগান বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। ভাল করে সাজানোর চেষ্টা হচ্ছে পাখিরালয় সংলগ্ন অতিথিশালাটিকে।’’
ওই অতিথিশালার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা প্রদীপ বারুই বলেন, ‘‘পাখিরা আসতে শুরু করায় ছুটির দিনগুলিতে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে এখানে।’’ পীযুষ হালদার নামে এক মাঝি বলেন, ‘‘শীতের মরসুমে পর্যটকদের পাখি দেখিয়ে ভাল আয় হয়। তাঁরা পাখির ছবি তোলেন। নিরাপত্তা সংক্রান্ত নির্দেশ মেনে চলছি।’’ পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় জানান, মদ্যপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে পাখিরালয়ে। মত্ত অবস্থায় কাউকে দেখা গেলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। বয়স্ক মানুষ যাতে নৌকায় না ওঠেন, সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওয়াচ টাওয়ার এবং ঘাটের কাছাকাছি এলাকায় শীতকালে প্রচুর মানুষ হই-হট্টগোল করে পিকনিক করেন। ফলে দূরে চলে যায় পাখিরা। পিকনিক শেষে অনেকে প্ল্যাস্টিকের ব্যাগ-সহ নানা জিনিসপত্র ফেলে দেন ঘাট চত্বরে। ছড়ায় দূষণ।