Coronavirus

সাংসদ-বিধায়ক তহবিলে কেনা অ্যাম্বুল্যান্সে নজর

গত কয়েকদিনে বর্ধমান শহরে একশোরও বেশি করোনা-আক্রান্তের হদিস মিলেছে। এক দিনেই ৪৯ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২০ ০৬:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কখনও অ্যাম্বুল্যান্স পেতে দেরি হচ্ছে, আবার কখনও অ্যাম্বুল্যান্স মিলছে না— অভিযোগ উঠছে বারবার। সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পাড়ার ক্লাব, সংক্রমণের ভয়ে অ্যাম্বুল্যান্স দিতে অনেকেই রাজি হচ্ছে না বলে দাবি করছেন অনেক রোগীর পরিজনেরা। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হেল্পলাইন নম্বর ১০২-এ ফোন করে এখন শুধু করোনা-আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা মিলছে। এক-এক দিনে এক সঙ্গে অনেকজন করোনা ‘পজ়িটিভ’ ধরা পড়ায় তাঁদের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করতে মুশকিলে পড়ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। এই পরিস্থিতিতে জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বিধায়ক ও সাংসদ তহবিল থেকে কেনা অ্যাম্বুল্যান্সগুলি কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কোন ব্লক বা পুরসভায় কত অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে, তার তালিকাও করতে বলা হয়েছে।

Advertisement

গত কয়েকদিনে বর্ধমান শহরে একশোরও বেশি করোনা-আক্রান্তের হদিস মিলেছে। এক দিনেই ৪৯ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ ছাড়া, সাধারণ রোগীরাও রয়েছেন। ফলে, অ্যাম্বুল্যান্সের চাহিদা আকাশ ছোঁয়া। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ১০২ নম্বরের পরিষেবায় ২০টি, পরিবহণ দফতরের পাঁচটি এবং বর্ধমান পুরসভার তিনটি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। এই ক’টি অ্যাম্বুল্যান্স হাতে নিয়ে কাজ করতে হিমসিম হতে হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরকে। স্বাস্থ্য-কর্তাদের ধারণা, যেহেতু ‘অ্যান্টিজেন টেস্ট’ ব্লক স্তরে শুরু করা হচ্ছে, তাই আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১০২ নম্বরের পরিষেবায় আরও কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলায় অনেক অ্যাম্বুল্যান্স থাকলেও, সেগুলি মূলত ‘নন-কোভিড’ রোগী বহন করছে। বর্ধমান পুরসভার আধিকারিক জয়রঞ্জন সেন অবশ্য বলেন, ‘‘মাঝে এক সঙ্গে অনেকজন করোনা-আক্রান্ত হওয়ায় সমস্যা হয়েছিল। তবে নির্দিষ্ট ঠিকানা জানালে ও ধৈর্য্য ধরলে অ্যাম্বুল্যান্স পেতে সমস্যা হচ্ছে না।’’ এক দিন ভাতারে ৫২ জন ও জামালপুরে ৩৯ জন করোনা-আক্রান্তের হদিস মিলেছিল। একটি ব্লকের স্বাস্থ্য-আধিকারিক বলেন, ‘‘অনেক আক্রান্তকে ‘সেফ হোমে’ রাখা হয়েছে। কেউ কেউ ‘হোম আইসোলেশন’-এ আছেন। দেরিতে হলেও ১০২ নম্বর থেকে অ্যাম্বুল্যান্স মিলেছে।’’ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা-আক্রান্তদের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স পেতে সমস্যা মেটাতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে কিছু দিন আগে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়। তবে বর্ধমান পুরসভার এক কর্তার দাবি, ‘‘যে হারে করোনা-আক্রান্ত বাড়ছে, তাতে অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া মুশকিল হচ্ছে। এখন থেকে পরিকল্পনা করা জরুরি।’’

Advertisement

জেলা প্রশাসন জানায়, সরকারি অনুদানে বিধায়ক ও সাংসদ তহবিলের টাকায় অ্যাম্বুল্যান্স কেনা হয়। সেগুলি পরিচালনা করে বিভিন্ন ক্লাব বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে ‘কোভিড’ বা ‘নন-কোভিড’ বাছবিচার না করে সেগুলি রোগী পরিবহণে ব্যবহারের কথা ভেবেছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলায় বিধায়ক ও সাংসদ তহবিলে কেনা ১৪৩টি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। এর মধ্যে ১০৫টি রোগী পরিবহণের কাজ করে। বাকিগুলি ‘অচল’। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেক মহকুমা প্রশাসনকে ‘অচল’ অ্যাম্বুল্যান্সগুলি ‘সচল’ করতে বলা হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (পরিকল্পনা, উন্নয়ন, স্বাস্থ্য) রজত নন্দ বলেন, ‘‘পরিকল্পনা দফতর এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট দিচ্ছে।’’ পরিকল্পনা বিভাগের আধিকারিক সৈকত হাজরা জানান, কোথায় কত অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে, সে তালিকা স্বাস্থ্য দফতর ও ব্লক দফতরে জানানো হয়েছে।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement