বাঁ দিকে, কলেজ চত্বরে পড়েছে এ ধরনের পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
ক্লাস শুরুর আগেই কলেজের নতুন ভবনের দেওয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ার অভিযোগে শুরু হল চাপান-উতোর। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণকাজের জন্যই পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী কলেজে এই রকম ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে সিপিএম। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ কিছু পোস্টারও পড়েছে। ব্লক প্রশাসন জানায়, কী ভাবে এমনটা ঘটল তা সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে জানতে চাওয়া হবে।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়ুয়া সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কলেজে নতুন ক্লাসঘরের দরকার হয়। সে জন্য একটি চারতলা ভবন তৈরির উদ্যোগ হয় ২০১৭ সালে। প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। নতুন ভবনে বেশ কিছু ক্লাসঘরের পাশাপাশি, দু’টি পরীক্ষাগারও তৈরি হয়। শীঘ্রই সেই ভবনে কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ চালু হওয়ার কথা। সম্প্রতি পূর্ত দফতর কলেজ কর্তৃপক্ষকে ভবনটি হস্তান্তর করে।
অভিযোগ, নতুন ভবনে বেশ কিছু ঘর, বারান্দা, ছাদে নানা জায়গায় দেখা দিয়েছে লম্বা-লম্বা ফাটল। সে নিয়ে ক্ষোভ তৈরি দিয়েছে ছাত্রছাত্রীদের একাংশের মধ্যে। সায়ন্তন বিশ্বাস, সোয়েল শেখদের দাবি, নিম্নমানের জিনিসপত্র দিয়ে তৈরি হয়েছে ভবনটি। সেখানে যেতে পড়ুয়ারা সাহস পাচ্ছেন না। শনিবার সকালে কলেজের পুরনো ভবনে ঢোকার মুখে বেশ কিছু পোস্টার দেখা যায়। সাদা কাগজে কালো কালিতে লেখা সে সব পোস্টারে নতুন ভবনে ফাটল ধরার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। ভবনটি তৈরির কাজে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগও তোলা হয়েছে। প্রতিটি পোস্টারের তলায় লেখা রয়েছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের নাম। যদিও এসএফআইয়ের দাবি, তারা এমন পোস্টার দেয়নি।
পূর্বস্থলী উত্তরের সিপিএম বিধায়ক প্রদীপ সাহা দাবি করেন, ওই কলেজে এসএফআইয়ের কোনও শাখা এখনও তৈরি হয়নি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা হয়তো প্রতিবাদ করে এমন পোস্টার দিয়েছেন।’’ সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে তৈরির কারণেই হয়তো নতুন ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। এখন ওই ভবনটি বিপজ্জনক। ওখানে তাই ক্লাস করানো আপাতত ঠিক নয়।’’
কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, ‘‘বিদ্যুতের সংযোগ যাওয়ার কয়েকটি জায়গায় অল্প ফাটল দেখা দিয়েছে। কোনও ভাবেই তা বিপজ্জনক নয়। ইতিমধ্যে ফাটলগুলি মেরামত করাও শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সিপিএম নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে।’’
পূর্বস্থলী ২ বিডিও সৌমিক বাগচি বলেন, ‘‘ভবনটি তৈরি করেছে পূর্ত দফতর। ঠিক কী হয়েছে, তা ওই দফতরের কাছ থেকে জানা হবে।’’