—প্রতীকী চিত্র।
প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিম বর্ধমান-সহ রাজ্য জুড়ে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা চলছে। কিন্তু ধান বিক্রি করতে সমস্যায় পড়ছেন বলে অভিযোগ জেলার ভাগচাষিদের একাংশের। তাঁদের অভিযোগ, অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের পরেও দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা ধান বিক্রির তারিখ পাচ্ছেন না। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছেও জানানো হয়েছে বলে দাবি।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা খাদ্য ও খাদ্য সরবারহ দফতর জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ বর্ষে সহায়ক মূল্যে প্রায় ৬৯ হাজার টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। গত বছর এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল, প্রায় ৬৬ হাজার টন। এই বছর সহায়ক মূল্য ২,১৮৩ টাকা প্রতি কুইন্টাল। কোনও চাষি কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রি করলে ২০ টাকা প্রতি কুইন্টালে উৎসাহ ভাতা দেওয়া হবে। গত শুক্রবার পর্যন্ত ৬,৮৭০ টন ধান কেনা হয়েছে।
সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে চাষিদের সরকারি পোর্টালে অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করতে হয়। তার পরে নির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া হয় ধান বিক্রির জন্য। অনলাইনে আবেদন করার ক্ষেত্রে কোনও চাষি ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে গিয়ে অথবা নিজে থেকেও করতে পারেন চাষিরা। ভাগচাষিরা জানান, সরকারি পোর্টালে তাঁদের আবেদন করতে হলে, একটি ‘সেল্ফ
ডিক্লেয়ারেশন’ জমা দিতে হয়। সেখানে কতটা জমিতে চাষ করেন, কার জমি, সে সব তথ্যের উল্লেখ করতে হয়। আর সে সব ‘যাচাইয়ের’ পরে ভাগচাষিরা সরকারি কেন্দ্রে ধান বিক্রির সুযোগ পান।
কিন্তু কাঁকসা ব্লকে বেশ কিছু চাষি আবেদন করলেও এখনও তাঁরা ধান বিক্রির কোনও তারিখ পাননি বলে অভিযোগ। বাবুরাম টুডু নামে এক ভাগচাষি জানান, ১৯ ডিসেম্বর অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এখনও কোনও তারিখ মেলেনি। শিবধন হেমব্রম নামে এক চাষি জানান, তাঁরা বসুধার একটি সমবায়কেন্দ্র থেকে অনলাইনে আবেদন করেছিলেন।
কিন্তু এখনও যাচাই করা হয়নি। ধানও বিক্রি করতে পারেননি।
চাষিরা জানান, সম্প্রতি ডাঙাল এলাকায় ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা এসেছিলেন। তাঁদের কাছে সমস্যার কথা জানানো হয়। কিন্তু এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি।
এ দিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খাদ্য ও খাদ্য সরবরাহ দফতরের এক আধিকারিক জানান, ভাগচাষিদের বিষয়গুলি যাচাইয়ের দায়িত্ব রয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনের। সেখান থেকে চাষির দেওয়া সব তথ্য ঠিক রয়েছে জানানো হলে, ধান বিক্রি করার তারিখ দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও ভাগচাষি যে তথ্য দিয়েছেন, তা ঠিক কি না, সেটা ভাল করে খোঁজ নিতে হয়। তাই কিছুটা সময় লাগে। অতিরিক্ত জেলাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “অনলাইন পোর্টালে কিছু সমস্যা ছিল। তা মিটে গিয়েছে। ভাগচাষিদের যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”