কেন্দ্রটির বর্তমান অবস্থা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় তেরো বছর আগে পশ্চিম বর্ধমানের প্রথম বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া মঙ্গলপুর শিল্পতালুকের কাছে তৈরি করা হয়েছিল। সাবেক আসানসোল, কুলটি, জামুড়িয়া ও রানিগঞ্জ পুর-এলাকার বর্জ্য মজুত করে প্রক্রিয়াকরণের কথা ছিল। কিন্তু প্রায় এক দশক ধরে সেই কেন্দ্রটি বন্ধ। বেশ কিছু জিনিসপত্রও চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ।
২০১০-এর সেপ্টেম্বরে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কেন্দ্রটি চালু করে। সেখানে বর্জ্য সংগ্রহ করে মজুতও করা হচ্ছিল। পচনশীল পদার্থ থেকে সার, প্লাস্টিক থেকে প্লাস্টিক সামগ্রী ও কঠিন বর্জ্য থেকে ইট তৈরির কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু ২০১২-য় কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়।
কিন্তু বর্তমানে প্রাচীর ঘেরা কেন্দ্রটি ধংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কয়েক জন রক্ষী কেন্দ্রটিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন রক্ষী জানিয়েছেন, চার পাশে জঙ্গল। মাঝে মাঝেই সাপ বেরোয়। আলো, জলের ব্যবস্থা নেই। তাঁদের লাঠি ও টর্চ দেওয়া হয়েছে। রাতে পুরো কেন্দ্রটিতে আলোর ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। এই পরিস্থিতিতে মূল্যবান যন্ত্রাংশ, টিনের চালের কাঠামোর বিভিন্ন অংশ চুরি হয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ার বর্জ্য ব্যবস্থাপন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল পুরসভার সাফাইকর্মীরা রানিগঞ্জের রনাই, রাজবাড়ি মোড় লাগোয়া চত্বর, মহাবীর কোলিয়ারি খোলামুখ খনি, সিহারসোল খোলামুখ খনি, রানিসায়র জল ট্যাঙ্কি, রাজারবাঁধ, বাদামবগান-সহ বিভিন্ন এলাকায় বর্জ্য ফেলে দিয়ে যাচ্ছেন। জামুড়িয়া বাসস্ট্যান্ড, শহরের বাইপাস, নন্ডী রোড-সহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে আবর্জনা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা নিয়মিত আবর্জনা সাফ করে না। ফলে, বাসিন্দাদেরও অনেকে রাস্তার পাশে আবর্জনা ফেলতে বাধ্য হন। এর ফলে, দূষণ বাড়ছে। গবাদি পশুরা ওই বর্জ্য থেকে খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তা ছাড়া, আর্বজনায় আগুন ধরানোর ফলে দুর্গন্ধ ও বায়ু দূষণও হচ্ছে বলে অভিযোগ।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক অজয় খেতান জানান, বেশির ভাগ জায়গায় নোংরা ফেলার ডাস্টবিন নেই। বাসিন্দারা নর্দমা ও জলাশয়গুলির ধারে আবর্জনা ফেলতে বাধ্য হন। পুরসভা বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি চালু করে বাড়ি-বাড়ি আর্বজনা সংগ্রহ করুক, চাইছেন অজয়-সহ নাগরিকদের বড় অংশই।
বিষয়টি নিয়ে এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তথা রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আসানসোল পুরসভাকে কেন্দ্রটি পরিচালনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওরা রাজি।”