প্রতীকী ছবি
ইন্টারনেটের গোলযোগের জেরে নির্দিষ্ট পোর্টালে পড়ুয়াদের বার্ষিক পরীক্ষার নম্বর ‘আপলোড’ করার কাজ ব্যাহত হচ্ছে, অভিযোগ নানা স্কুলের শিক্ষকদের। ফলে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে কি না, সে নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা।
স্কুল শিক্ষা দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে স্কুল পড়ুয়াদের বার্ষিক পরীক্ষার ফল বাংলা শিক্ষা ই-পোর্টালের মাধ্যমে জানা যাবে। পড়ুয়ারা এই পোর্টাল থেকে ‘ডিজিটাল মার্কশিট’ পাবে। পড়ুয়াদের নিজস্ব ‘আইডি’ বানাতে হবে। তা ব্যবহার করে মার্কশিট মিলবে। পরীক্ষার ফলাফল দেখা, প্রয়োজনে ‘ডাউনলোড’ করে নেওয়া যাবে। সে জন্য সব স্কুলকে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ওই পোর্টালে ‘আপলোড’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। তার কয়েকদিনের মধ্যেই পরীক্ষার ফল বেরনোর কথা। সে অনুযায়ী, স্কুলগুলিতে কাজও শুরু হয়েছে।
কিন্তু জেলার বহু স্কুলের শিক্ষকদের অভিযোগ, ‘সার্ভার’-এ সমস্যা থাকায় ‘আপলোড’ করার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। ইন্টারনেটের গতি কম থাকার জেরেও সমস্যা বাড়ছে বলে অভিযোগ। তাই সময়মতো বার্ষিক পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা। দুর্গাপুরের অঙ্গদপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অম্বর সিংহরায় বলেন, ‘‘স্কুল চলাকালীন সার্ভারে নম্বর আপলোড করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। বড়দিনের আগে যাতে পড়ুয়াদের ফলাফল জানিয়ে দিতে পারি, সে জন্য সাবেক পদ্ধতিতে কাগজে-কলমে ফলাফল তৈরি করে রাখছি। সেই সঙ্গে স্কুলশিক্ষা দফতরের নির্দেশিত সময়ের মধ্যে পোর্টালে ফলাফল আপলোড করারও চেষ্টা চলছে।’’ পলাশডিহা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শিবদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাবেক পদ্ধতিতে ফলাফল তৈরির কাজ শেষ। ইন্টারনেটের গতি কম থাকায় আপলোড করতে দেরি হচ্ছে।
দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ভুড়কুণ্ডা এনসি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ আলি বলেন, ‘‘স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা এত বেশি যে সাবেক পদ্ধতিতে পড়ুয়াদের হাতে পরীক্ষার ফল তুলে দেওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়। গত কয়েক বছর ফলাফল কম্পিউটার থেকে প্রিন্ট করে দিয়েছি পড়ুয়াদের। এ বার থেকে আর সেটার দরকার পড়বে না। ভাল উদ্যোগ।’’ তবে তিনিও অভিযোগ করেন, ইন্টারনেটের সমস্যায় স্কুল চলাকালীন তো দূর, বাড়িতে গিয়ে রাতেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ‘পোর্টাল’-এ নম্বর ‘আপলোড’ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আসানসোল, রানিগঞ্জ, পাণ্ডবেশ্বর, অণ্ডাল-সহ নানা জায়গার বহু স্কুলের শিক্ষকেরা একই সমস্যা পড়ছেন।
বহু স্কুলে খোঁজ নিয়ে আবার জানা গিয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকে কম্পিউটার ব্যবহারে এখনও তেমন স্বচ্ছন্দ নন। ফলে, অন্যের উপরে নির্ভর করতে গিয়ে কাজে দেরি হচ্ছে। আবার বছরের এই সময়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকে ছুটি নেন। তাই প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকারা হাতে লোক কম পাচ্ছেন। এ সব কারণেও ‘পোর্টাল’-এ নম্বর ‘আপলোড’ করতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ নানা স্কুলে।
জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অজয় পাল অবশ্য জানান, তাঁর দফতরে এখনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করবেন। স্থানীয় ভাবে সমস্যা না মিটলে স্কুল শিক্ষা দফতরে যোগাযোগ করে সমস্যার সুরাহা করা হবে।’’ তাঁর পরামর্শ, কোনও স্কুল অসুবিধায় পড়লে যেন তাঁর দফতরে যোগাযোগ করে।