kalipuja

কালীপুজোর সঙ্গে প্রেমের কাহিনি মিশে রয়েছে বাংলার এই মন্দিরে, আখ্যান ঘোরে মুখে মুখে

কথিত আছে, যাঁরা অন্যায় করতেন, তাঁদের এই মন্দিরে দেবীর সামনে হাঁড়িকাঠে বলি দেওয়া হত। তাই এই দেবী দক্ষিণ মশান কালী নামেও পরিচিত ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২২ ২০:৪২
Share:

একদা কালীমন্দিরে পুজো করতেন বর্ধমানের মহারাজা তেজচাঁদ। — নিজস্ব চিত্র।

অতীতে মন্দিরে কালীর সামনে নরবলি হত। রাজার মেয়ের সঙ্গে প্রেম হয় পূজারীর। আর সেই প্রেমের কারণেই বন্ধ হয়ে যায় নরবলি। সেই অদ্ভুত উপাখ্যান আজও ভেসে বেড়ায় বর্ধমানের তেজগঞ্জের বিদ্যাসুন্দর কালীমন্দিরে।

Advertisement

একদা তেজগঞ্জে দামাদর নদীর তীরে ছিল গভীর জঙ্গল। সেখানেই কালীমন্দিরে পুজো করতেন বর্ধমানের মহারাজা তেজচাঁদ। কথিত আছে, যাঁরা অন্যায় করতেন, তাঁদের এই মন্দিরে দেবীর সামনে হাঁড়িকাঠে বলি দেওয়া হত। তাই এই দেবী দক্ষিণ মশান কালী নামেও পরিচিত ছিল। দিনেও ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াত করার খুব একটা সাহস করতেন না কেউ।

রাজার বিদ্যা নামে এক মেয়ে ছিলেন। রাজবাড়ির পূজারী ছিলেন গরিব ব্রাহ্মণ যুবক সুন্দর। রাজবাড়িতে ফুল দিতেন মালিনী নামে এক মহিলা। মালিনীর আনা এক মালা দেখে খুব ভাল লাগে সুন্দরের। তিনি জিজ্ঞেস করেন, মালা কে গেঁথেছে। মালিনী বলেন, রাজকুমারী বিদ্যা গেঁথেছেন।

Advertisement

পরে বিদ্যার সঙ্গে সুন্দরের পরিচয় হয়। তাঁদের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শোনা যায়, মন্দির থেকে রাজবাড়ি পর্যন্ত একটা সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ফেলেন দু’জন। সেই সুড়ঙ্গপথেই দেখা করতেন দু’জনে। সে কথা কানে যায় রাজা তেজচাঁদের। তিনি বিদ্যা এবং সুন্দরকে কালীর সামনে বলি দেওয়ার নির্দেশ দেন ৷ রাজার হুকুমে তাঁদের বলি দিতে নিয়ে যাওয়া হয় মন্দিরে। হাঁড়িকাঠে বিদ্যা ও সুন্দরের মাথা দেওয়া হয়। সে সময় কাপালিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। উধাও হয়ে যান বিদ্যা আর সুন্দর।

রাজ্যপাট নেই। তবে এখনও প্রাচীন রীতি মেনেই কালীপুজো হয় বলে জানান সেবাইত আভা বটব্যাল। তবে জাঁকজমক আর আগের মতো নেই। মা এখানে পাষাণ মূর্তি। নিত্যদিন পুজো হয়। সন্ধ্যা আরতি হয়। নরবলি বন্ধ হলেও কার্তিক মাসের অমাবস্যায় ছাগ বলি দেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement