এই স্কুলেই হবে মনোনয়নপত্র জমা ও তোলা। পরিদর্শনে প্রশাসন-পুলিশের কর্তারা। নিজস্ব চিত্র।
হাওড়াকে বাদ রেখেই, প্রথম দফায় আসানসোল-সহ চার পুরনিগমের ভোট-নির্ঘণ্ট সোমবার প্রকাশ করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ঘোষণা পরেই ‘ভোট-যুদ্ধে’ নেমে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল ও বিরোধীরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দেওয়াল লিখনও শুরু করে দিয়েছে। ভোট-প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারাও।
এ দিন বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস জানান, আসানসোল, শিলিগুড়ি, বিধাননগর ও চন্দননগরের ভোট হবে ২২ জানুয়ারি। পশ্চিম বর্ধমান প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দেশিকা মতো সোমবার রাত থেকে পুরসভা এলাকায় আদর্শ নির্বাচন বিধি বলবৎ করা হয়েছে। যদি কোনও বুথে পুনর্নির্বাচন করা হয়, তবে তা ২৪ জানুয়ারি করাতে হবে। আসানসোল পুরসভার জন্য আসানসোলের জিটি রোড লাগোয়া সেন্ট জোসেফ হাইস্কুলে মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা করা যাবে। আসানসোলের নির্বাচন আধিকারিক তথা মহকুমাশাসক (আসানসোল) অভিজ্ঞান পাঁজা জানিয়েছেন, আজ, মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত এই কাজ চলবে। মনোনয়নপত্র তোলা ও জমার জন্য মোট ১৮টি কাউন্টার থাকছে। অভিজ্ঞান বলেন, “সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গিয়েছে।” তিনি জানিয়েছেন, গণনাকেন্দ্র এখনও ঠিক করা হয়নি। সে প্রক্রিয়া চলছে।
সোমবার ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পরেই, সেন্ট জোসেফ হাইস্কুল চত্বর ঘুরে দেখেন কমিশনারেটের ডিসিপি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সোনাওয়ানে। তিনি জানান, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৪ জানুয়ারি সর্বদল বৈঠক করা হবে। নির্বাচন কমিশনের তরফে সমস্ত বুথে ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিজ্ঞান জানান, কমিশনের নির্দেশ কঠোর ভাবে পালন করা হবে।
শুরু দেওয়াল লিখন। কুলটির নিয়ামতপুরে। নিজস্ব চিত্র
এ দিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, “আমরা চাই, মানুষ নিজের ভোট নিজেই দিক।” তবে তাঁর অভিযোগ, “রাজ্যের শাসকদলকে সুবিধা করে দিতেই, নির্বাচন কমিশন এ ভাবে ভোটের নির্ঘণ্ট তৈরি করেছে। তবে, আমরা প্রস্তুত।” তৃণমূলকে বিঁধে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করানোর দাবি জানিয়েছেন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিলীপ দে। তিনি বলেন, “কমিশন শাসকদলকে যতই সুবিধা করে দিক না কেন, গত বিধানসভা ও লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে আসানসোল পুর-এলাকায় আমরাই এগিয়ে।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, “ভোটের মুখে দল ‘ভাঙানো’র প্রক্রিয়ায় মেতেছে তৃণমূল। এ বারের ভোটে সাধারণ ভোটাররা সুযোগ পেলে, তার যোগ্য জবাব দেবেন।” তবে বিরোধীদের কোনও কথাকেই আমল দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের জেলা কমিটির অন্যতম সম্পাদক অভিজিৎ ঘটক বলেন, “বিরোধীরা মনগড়া কথা বলছেন। তাতে ক্ষতি নেই। মানুষ ঠিক করে নিয়েছেন, তাঁরা কোন পক্ষে থাকবেন।”