মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বাংলায় আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভিন্রাজ্যে আলু রফতানি আপাতত বন্ধ করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে আবেদন করলেন আলু ব্যবসায়ীরা। অন্য দিকে, ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেডি প্রধান নবীন পট্টনায়েকও চিঠি দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে।
তিন দিন ধর্মঘটের পর বুধবারই তা প্রত্যাহার করেছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি নামে ব্যবসায়ীদের সংগঠন। রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্নার সঙ্গে বৈঠকের পর আবার হিমঘর খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলায় উৎপাদিত আলু ভিন্রাজ্যে পাঠানোর উপর রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে এখনও একের পর এক ট্রাক দাঁড়িয়ে রাজ্যের সীমান্ত এলাকাগুলিতে। বাংলার আলু না পেয়ে টান পড়েছে বেশ কয়েকটি রাজ্যে। দামও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে চিঠি দিয়ে সীমান্ত খুলে দেওয়ার আবেদেন জানিয়েছেন। আর প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতিও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সেই একই আবেদন করেছেন। উল্লেখ্য, বাংলার আলু যায় বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং অসমে।
হিমঘর থেকে আলু বেরোনোর পর কলকাতা এবং জেলার সব্জি বাজারগুলিতে আলুর জোগান স্বাভাবিক হয়েছে। এখন বেশির ভাগ বাজারে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কিলোগ্রাম দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। তবে যে চাষিরা হিমঘরে আলু রেখেছেন, তাঁদের দাবি, ব্যবসায়ীরা আলু কিনতে চাইছেন না। ভিন্রাজ্যে আলু পাঠাতে-না পেরে ব্যবসায়ীরা এই পন্থা নিয়েছেন।
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে আলুর চাহিদা মিটিয়ে বাইরের রাজ্যে আলু পাঠানো হয়। যে ছোট আলু বাংলায় বিক্রি হয় না, সেই আলু যায় বাইরে। ভিন্রাজ্যে বাংলার আলুর একটা বাজার আছে। সেই বাজার হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কৃষকদের থেকে আলু কিনে যে ব্যবসায়ীরা ভিন্রাজ্যে পাঠান, সেই চাষিরাও ক্ষতির মুখে পড়ছেন।’’ তবে ব্যবসায়ীরা আশাবাদী যে, কয়েক দিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হবে।
রাজ্য হিমঘর অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শুভজিৎ সাহা বলেন, ‘‘৬২ লক্ষ মেট্রিক টন আলু হিমঘরগুলোতে মজুত করা হয়েছিল। শনিবার পর্যন্ত প্রায় ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু হিমঘরে আছে। সাত লক্ষ মেট্রিক টন করে আলু প্রতি মাসে হিমঘর থেকে বার করা হয়। পাঁচ লক্ষ মেট্রিক টন আলু লাগে রাজ্যে। বাকি দুই লক্ষ বাইরে যায়। সেই আলু বাইরে-না পাঠানোর ফলে হিমঘরে জমে রয়েছে। সরকার নিশ্চয়ই ভাববে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আলু উৎপাদনে ভারতে দ্বিতীয় স্থানে পশ্চিমবঙ্গ। বাংলার আলুর বাইরেও বাজার রয়েছে। সেই বাজার যাতে অন্য রাজ্য দখল করতে না পারে, সে দিকটাও সরকারকে ভাবতে হবে।’’