কাটোয়া-পঞ্চাননতলা রাস্তার হাল। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
বর্ষা এলে রাস্তা যেন ডোবায় পরিণত হয়ে যায়। তাই বাসিন্দারা অনেক সময়ে সেখানে ধানের চারা পুঁতে রাস্তা সংস্কার না হওয়ার প্রতীকী প্রতিবাদ জানান। কাটোয়া মহকুমায় ছোট থেকে বড়, নানা রাস্তারই এক পরিস্থিতি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। চলতি বছরেও রাস্তার হাল নিয়ে নানা এলাকায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়েছে। রাস্তা সারাতে বাস মালিক সংগঠনের তরফে মহকুমা প্রশাসনকে আর্জি জানানো হয়েছে। প্রশাসনের আশ্বাস, রাস্তা মেরামতের জন্য পদক্ষেপ করা হয়েছে।
কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া-কৈচর ও কাটোয়া-করুই, কাটোয়া-বনকাপাসি ভায়া গাঁফুলিয়া, করজগ্রাম-পঞ্চাননতলা, আমুল-ঘুঙুর-গৌরডাঙা, কৈথন-গিধগ্রাম-কলসা গ্রাম এলাকার রাস্তা রীতিমতো বেহাল হয়ে পড়েছে। সুনিয়া, শিলা ও কোয়ারা গ্রামের রাস্তাও চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। দিন কয়েক আগেই কোয়ারা গ্রামে ডিওয়াইএফের তরফে ধানের চারা পুঁতে প্রতিবাদ জানানো হয়।
বাসিন্দারা জানান, কেতুগ্রামের ভুলকুড়ি মোড় থেকে রসুই ঘাট, উদ্ধারণপুর থেকে সীতাহাটি হয়ে মৌগ্রাম যাওয়ার রাস্তা খারাপ হয়ে গিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই জল-কাদায় ভরে যায়। পায়রাকান্দি গ্রামের রাস্তার অবস্থাও সঙ্গিন। মঙ্গলকোটের শ্যামবাজার থেকে কোঁয়ারপুর যাওয়ার রাস্তা চলাচলের অযোগ্য বলে অভিযোগ। কুলসোনা গ্রামের ভিতরের রাস্তা, পশ্চিম মঙ্গলকোটের নানা গ্রামের রাস্তাও বেশ বেহাল।
কোয়ারা গ্রামের বাসিন্দা অমিত মণ্ডল, বাবর আলি শেখরা বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামের রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয় না। সারা বছর রাস্তায় ধুলো ওড়ে। আর সামান্য বৃষ্টি হলেই এক হাঁটু জল-কাদা জমে যায়। সেই সময়ে রাস্তায় নামলে কার্যত নরক-যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়।’’ তাঁদের দাবি, রাস্তা সংস্কারের দাবি প্রশাসনের নানা মহলে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে কয়েক দিন আগে তাঁরা বেহাল রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মঙ্গলকোটের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা সাগর মুখ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘শ্যামবাজার থেকে কোঁয়ারপুর গ্রামের রাস্তা খুবই খারাপ। বড়-বড় খন্দ দেখা দিয়েছে। মোটরবাইক থেকে শুরু করে যে কোনও গাড়ি চলাচলে বিপদের আশঙ্কা প্রতি থেকে যায়।’’
কাটোয়া বাস মালিক সমিতির সভাপতি নারায়ণচন্দ্র সেনের অভিযোগ, ‘‘কাটোয়া থেকে কৈচর, করুই, গাঁফুলিয়া হয়ে বনকাপাসি-সহ নানা এলাকায় যাতায়াতের রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। বাসের চালক ও যাত্রীদের রীতিমতো ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। খন্দে চাকা পড়ে প্রায়ই গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙে যাচ্ছে। রাস্তা সংস্কারের দাবি আমরা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।’’
মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে রাস্তাগুলি সংস্কারে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’’