এমনই হাল আসানসোল বাজারের বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর। নিজস্ব চিত্র
জেলা তথা রাজ্যের অন্যতম বড় বাজার আসানসোল বাজার। কিন্তু এখানে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকাঠামো নিয়ে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। যদিও, বিদ্যুৎ দফতর জানিয়েছে, বাজার-সহ আসানসোল শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকাঠামো উন্নয়ন ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অথচ, অতীতে এই বাজারে শর্ট সার্কিটের জেরে অগ্নিকাণ্ড, গত বছর ফুটপাতের খোলা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী দীপক কুমার বলেন, ‘‘মাথার উপরে এক হাতের মধ্যে ঝুলছে খোলা বিদ্যুতের তার। খুবই ভয় হয়। কিন্তু উপায় নেই। ব্যবসা ছাড়তে পারব না।’’ আসানসোল পুরসভার হিসেবে, এই বাজারে প্রতিদিন কমপক্ষে সওয়া লক্ষ মানুষের উপস্থিতি থাকে। উৎসবের মরসুমে ভিড় আরও বাড়ে। এই পরিস্থিতিতে ক্রেতারাও শঙ্কিত। সুখেন্দু নাগ নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘‘প্রতিদিনই বাজারে আসতে হয়। বিদ্যুতের খুঁটি ও তারগুলি ঠিক করা হলে আমরা নিরাপদে কেনাকাটা করতে পারি।’’
তবে, রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আসানসোলের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার শুভেন্দু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাজার এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিকাঠামো উন্নয়ন ঘটানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’’— এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ‘আসানসোল ভেজিটেবল ডিলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি তরুণ ভগত, ‘আসানসোল ফিসারিজ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রবীণ সদস্য মহম্মদ ইলিয়াসেরা। তবে মহম্মদ ইলিয়াস বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর উন্নয়ন বাস্তবে না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বাস নেই। কারণ, প্রায় ১৪ বছর ধরে এ কথা শুনছি।’’ বিদ্যুৎ দফতর সূত্রেও জানা গিয়েছে, প্রথমবার ২০০৬-এ এই বাজারের বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হয়েছিল। খরচ ধরা হয়েছিল প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা।
কিন্তু সে বার কাজ হয়নি কেন? দফতর সূত্রে দাবি, সে বার কথা ছিল, বাজারের মধ্যে থাকা ১৪৭টি বিদ্যুতের খুঁটিকে সরিয়ে ফেলা হবে। সমস্ত কেব্ল মাটির তলা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। কোনও উপায় না থাকলে কিছু এলাকায় মাথার উপরে ‘ইনসুলেটেড কেব্ল’ বসানো হবে। কিন্তু সে বার ব্যবসায়ীদের একাংশের ‘বাধা’য় এই কাজে হাতই পড়েনি। এই কাজটি সময় সাপেক্ষ। যে সমস্ত অঞ্চলে কাজ হওয়ার কথা ছিল, সেখানকার কিছু দোকান কয়েক দিনের জন্য বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা মানেননি ব্যবসায়ীদের একাংশ, দাবি দফতরের। ফলে, কাজও হয়নি। তবে এ বার সেই পরিস্থিতি যাতে না হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি।