বর্ষার জলে কয়লা গুঁড়ো মিশে এমনই হাল রাস্তার। ডুবুরডিহি চেকপোস্ট লাগোয়া ২ নম্বর জাতীয় সড়কে। নিজস্ব চিত্র।
কোলিয়ারির রেল সাইডিংয়ের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি। কুলটি থানার অন্তর্গত বরাকরের ডুবুরডিহি চেকপোস্টের প্রায় তিনশো মিটার আগে থাকা রেল সাইডিংটি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের এমনই অভিযোগ।
রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা বিসিসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, দামাগড়িয়া খনির তত্ত্বাবধানে চলে এই সাইডিং। মূলত, খনি থেকে কয়লা তোলার পরে ডাম্পারে করে সে কয়লা এনে এই সাইডিংয়ে জমা করা হয়। পরে, সে কয়লা মালগাড়িতে চাপিয়ে অন্যত্র পরিবহণ করা হয়।
এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, এই সাইডিংটির জন্য মূলত তিন ধরনের অসুবিধা হচ্ছে। প্রথমত, ডাম্পার থেকে মালগাড়িতে কয়লা তোলা-নামানোর সময় কয়লার গুঁড়ো জাতীয় সড়কের উপরে ছড়িয়ে পড়ে। জাতীয় সড়কের প্রায় অর্ধেক অংশই কয়লার গুঁড়োর পুরু আস্তরণে ভরে গিয়েছে। বর্ষায় বৃষ্টির জল ও কয়লা গুঁড়োয় মাখামাখি হয়ে সড়ক অত্যন্ত পিছল হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েন স্কুটার ও মোটরবাইক চালকেরা।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রবোধ বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রায় রোজই কেউ না কেউ এখানে দুর্ঘটনায় পড়ছেন। রাতের অন্ধকারে এলাকাটি কার্যত বিপদের ফাঁদ হয়ে ওঠে। পুলিশ, কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেও লাভ হয়নি।’’ দ্বিতীয়ত, সাইডিংয়ে কয়লা নামাতে এসে ডাম্পারগুলি রাস্তার অর্ধেক অংশ জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে, দৃশ্যমানতার অভাবের জেরেও দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। তৃতীয়ত, গ্রীষ্ম ও শীতে কয়লা গুঁড়োর দূষণে জেরবার হন এলাকাবাসী।
বিষয়টি মেনে নিয়েছেন ২ নম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষও। ২ নম্বর জাতীয় সড়কের বারওয়াড্ডা প্রজেক্ট ডিরেক্টর মলয় দত্ত জানান, এলাকাটি দুর্ঘটনাপ্রবণ হওয়ার পাশাপাশি, সড়কেরও ক্ষতি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘এক কিলোমিটার সড়ক তৈরি করতে কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়। দিনের পর দিন কয়লা গুঁড়ো জমে থাকায় রাস্তার ওই অংশ বেহাল। সাইডিংয়ের জায়গায় ‘অবৈধ’ ভাবে একটি গেট করা হয়েছে। গেটটি বন্ধ করার জন্য কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।’’
দামাগড়িয়া কোলিয়ারির ডেপুটি পার্সোনেল ম্যানেজার সুমন্ত রায় বলেন, ‘‘আমরা সমস্যাটি নিয়ে ভাবছি। সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি জাতীয় সড়ক দখল করে দাঁড়িয়ে থাকা কয়লাবোঝাই বা খালি ডাম্পারগুলি নিয়মিত এলাকা থেকে সরানো হচ্ছে।