CPM

তরুণ প্রজন্মের মন পেতে তৎপর সব দল

পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এ বার ভোটার তালিকায় নতুন নাম সংযোজিত হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২২ হাজার। তাঁদের প্রায় ৯০ শতাংশই এ বার প্রথম ভোট দেবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৪:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

তৃণমূলের হাতিয়ার, ‘যুবশ্রী’-‘কন্যাশ্রী’র মতো প্রকল্পগুলি। বামেদের অস্ত্র, কর্মসংস্থান তৈরিতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ব্যর্থতা’। আর তৃণমূল ও বাম জমানার ‘বেকারত্ব’কে হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি। আগামী বিধানসভা ভোটে তরুণ প্রজন্মের সমর্থন পেতে যুযুধান সব শিবির নিজেদের যুক্তিতে
শান দিচ্ছে।

Advertisement

পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এ বার ভোটার তালিকায় নতুন নাম সংযোজিত হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২২ হাজার। তাঁদের প্রায় ৯০ শতাংশই এ বার প্রথম ভোট দেবেন। এই নব্য ভোটারদের মন বুঝতে গণ সংগঠনগুলিকে ব্যবহার করছে তৃণমূল, বিজেপি এবং সিপিএম। সভা-সমাবেশের প্রচারেও ঠাঁই পাচ্ছে তরুণ ভোটারদের চাহিদার প্রসঙ্গ।

তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র অশোক রুদ্র জানান, ‘কন্যাশ্রী’, ‘যুবশ্রী’ এবং মেধাবী পড়ুয়াদের বৃত্তিপ্রদানের মতো প্রকল্পগুলির কথা তুলে ধরেই নবীন প্রজন্মের ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করবেন তাঁরা। সম্প্রতি লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য রাজ্য সরকার পড়ুয়াদের ‘ট্যাব’ দিচ্ছে। পড়াশোনা শেষে কর্মসংস্থানের সুযোগ ও স্বনিযুক্ত প্রকল্পে বেকারদের উৎসাহিত করার জন্য প্রশিক্ষণ ও ব্যাঙ্ক ঋণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিষয়গুলিও তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের মনে ইতিবাচক ছাপ ফেলবে বলে মনে করে শাসক দল। অশোক বলেন, ‘‘ভোটে আমরা এই বিষয়গুলিই সবিস্তারে তুলে ধরব।’’ এ ছাড়া, নবীন ভোটার আকৃষ্ট করতে কিছু কৌশলও নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

অন্য দিকে, সিপিএম নেতৃত্ব মনে করেন, নবীন ভোটাদের আকৃষ্ট করার মতো কোনও অস্ত্র তৃণমূল বা বিজেপির হাতে নেই। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘গত এক দশকে এ রাজ্যে নতুন কোনও শিল্প তৈরি করতে পারেনি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। উল্টে, একের পরে এক সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা বন্ধ অথবা রুগ্ন হয়েছে। বন্ধ কারখানার জমিতে শিল্পস্থাপনের উদ্যোগও চোখে পড়েনি।’’ বামেদের দাবি, তৃণমূল জমানায় শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্যের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে কলেজে ভর্তি এবং শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’ হয়েছে। এর ফলে, রাজ্য সরকারের প্রতি ছাত্র-যুবদের বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বাম নেতৃত্ব। সিপিএম জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নবীন ভোটারদের কাছে এই বিষয়গুলি তুলে ধরার পাশাপাশি বিকল্প পথের দিশা দেখাব আমরা।’’

কী ভাবছে বিজেপি? বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘৩৪ বছর রাজ্যের নবীন ভোটারেরা সিপিএমকে দেখেছেন। গত ১০ বছর ধরে তৃণমূলকে দেখছেন। তৃণমূল ও বাম জমানায় রাজ্যে নতুন শিল্প আসেনি। রোজগারের খোঁজে বেকার যুবক-যুবতীদের ভিন্‌ রাজ্যে যেতে হচ্ছে।’’ এই প্রেক্ষিতে তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে কর্মসংস্থান তৈরিকেই প্রচারের মূল হাতিয়ার করছে বিজেপি।

কী ভাবছেন নতুন ভোটারেরা? কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালেয়র রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র দেবাংশু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলির ইস্তাহার দেখলেই বোঝা যাবে নবীনদের জন্য কী ভাবছে তারা। তার পরে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’ আসানসোলের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী অলিভিয়া দত্তর আক্ষেপ, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দল শুধু দলবদলের রাজনীতি এবং কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত। কারও বক্তৃতায় উন্নয়নের কথা শোনা যাচ্ছে না। এতেই পরিষ্কার, নবীনদের নিয়ে তাদের স্পষ্ট ভাবনা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement