Cyber Crime

সাইবার-প্রতারণা চিন্তা বাড়াচ্ছে কর্তাদের

পুলিশকর্তারা জানান, এই ‘প্রতারক’দের বেশির ভাগই ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, কুরমি, কণ্ডহী, নারায়ণপুর, কর্মাটাঁড়ের বাসিন্দা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২০ ০৪:১২
Share:

পুলিশকর্তাদের একাংশের অনুমান, সময়-সুযোগ বুঝে ফের সাইবার প্রতারকেরা ‘কাজ’ শুরু করেছে। ছবি সংগৃহীত।

বেশ কয়েকমাস পশ্চিম বর্ধমানের শিল্পাঞ্চল থেকে সাইবার-প্রতারণার অভিযোগ ওঠেনি। কিন্তু সম্প্রতি পাণ্ডবেশ্বরে একটি প্রতারণার ঘটনা সামনে আসায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা। পাশাপাশি, করোনা-পরিস্থিতির কারণে সচেতনতা প্রচারে খামতিও এর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন তাঁরা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল শিল্পাঞ্চলে গত বছর নভেম্বরের পরে আর সাইবার-প্রতারণার অভিযোগ আর ওঠেনি। এ বছরের জানুয়ারিতে ১২ সদস্যের একটি আন্তঃরাজ্য সাইবার ‘প্রতারণা চক্র’কে পাকড়াও করে পুলিশ। চক্রের সদস্যেরা ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, কুণ্ডহী এবং এই রাজ্যের অণ্ডাল, উখড়া, পাণ্ডবেশ্বর, কুলটির বাসিন্দা। এদের কাছ থেকে প্রচুর সংখ্যায় এটিএম কার্ড, ল্যাপটপ কয়েক লক্ষ টাকা ও একটি দামী গাড়ি মিলেছিল বলে পুলিশ জানায়।

এর পরে শহরবাসীকে সতর্ক করতে বিভন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এলাকার জনবহুল এলাকায় লাগাতার সাইবার অপরাধ দমন শাখার বিশেষজ্ঞেরা প্রতারণার বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে সচেতনতা প্রচার চালান। সেই সঙ্গে টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা গোপন সূত্র ধরে আসানসোল শিল্পাঞ্চল ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকায় অভিযানও চালাতে থাকেন। কিন্তু মার্চের গোড়া থেকে করোনা-পরিস্থিতির জেরে দু’টি কাজেই ভাটা পড়তে শুরু করে বলে পর্যবেক্ষণ পুলিশকর্তাদের একাংশের। এই পরিস্থিতিতে পাণ্ডবেশ্বরে সাইবার-প্রতারণার ঘটনা সামনে আসায়, পুলিশকর্তাদের একাংশের অনুমান, সময়-সুযোগ বুঝে ফের সাইবার প্রতারকেরা ‘কাজ’ শুরু করেছে।

Advertisement

পাশাপাশি, পুলিশকর্তাদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, অপরাধীরা প্রতারণার পদ্ধতিও পাল্টেছে বলে পাণ্ডবেশ্বরের ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে। যেমন আগে নানা অছিলায় ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর, এটিএম-এর পিন নম্বর, ‘ওটিপি’ (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) জেনে প্রতারণা করেছে। কিন্তু সম্প্রতি প্রতারকেরা বিভিন্ন মোবাইল সংস্থা ও একটি অর্থ লেনদেনকারী অনলাইন সংস্থার নাম করে ‘কেওয়াইসি’র (‌নো ইওর কাস্টমার) তথ্য জমা দেওয়ার কথা বলছে। এরা প্রথমে প্রতারিতদের একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ফোনে ডাউনলোড করাচ্ছে। পরে, অ্যাপের তরফে পাঠানো ‘ওটিপি’ জেনে নিচ্ছে।

পুলিশকর্তারা জানান, এই ‘প্রতারক’দের বেশির ভাগই ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, কুরমি, কণ্ডহী, নারায়ণপুর, কর্মাটাঁড়ের বাসিন্দা। তবে সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, একটি দল সীমানা ঘেঁষা সালানপুর, রূপনারায়ণপুরের জোড়বাড়ি, সিদাবাড়ি, কলাডাবর, কুলটির বামনডিয়া, রাধানগর শীতলপুর এলাকাতেও ডেরা বেঁধেছে।

এই পরিস্থিতিতে কমিশনারেটের এসিপি (সাইবার) সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা এমন বহু সাইবার প্রতারককে গ্রেফতার করে উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ করেছি। প্রতারিতদের টাকাও ফেরানো হয়েছে। কিন্তু করোনার জন্য অভিযানের ধারাবাহিকতা কিছুটা শিথিল হয়েছে। সেটাই কাজে লাগাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। আমরা ফের জোরকদমে সচেতনতা প্রচার শুরু করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement