(ইনসেটে) ‘নিহত’ রাজেশ বাউড়ি। সালানপুর থানায় বাসিন্দাদের জটলা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন রাজেশ বাউড়ি (৩৮) নামে এক যুবক। শনিবার সালানপুর থানার দোমদহ লাগোয়া এলাকায় মাটি খুঁড়ে তাঁর উদ্ধার করল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, রাজেশকে খুন করা হয়েছে। রাজেশের স্ত্রী বন্দনা খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। খুনের অভিযোগে জড়িত সন্দেহে এক দম্পতি-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবারই ধৃতদের আসানসোল আদালতে তোলা হলে, তাঁদের তিন দিনপুলিশ হেফাজতের নির্দেশদেন বিচারক।
সালানপুরের বাসুদেবপুর জেমারির বাসিন্দা রাজেশ গত সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি বলে পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়। তাঁর স্ত্রী বন্দনা গত মঙ্গলবার সালানপুর থানায় নিখোঁজ-ডায়েরি করেছিলেন। তিনি সে সময় উল্লেখ করেছিলেন, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজেশ তাঁর কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে মোটরবাইক মেরামত করার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরোন। শুক্রবার বিকেল পর্যন্তও রাজেশের কোনও খবর না পেয়ে পরিবার ও পড়শিরা সালানপুর থানায় গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তবে ওই দিন বিকেলেই রাজেশের পূর্ব পরিচিত পদ্মাবতী সোরেন ও তাঁর স্বামী অমিত সোরেন, পদ্মাবতীর বোন তিথি সোরেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ।
তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় পদ্মাবতী ও অমিত তাঁদের কাছে জানান, গত সোমবার সন্ধ্যায় পদ্মাবতী ফোন করে রাজেশকে দোমদহে ডেকে পাঠান। সেখানে পৌঁছে রাজেশ পদ্মাবতীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। অভিযোগ, সে সময় তাঁর মাথার পিছনে শাবল দিয়ে আঘাত করেন পদ্মাবতীর স্বামী অমিত।বার কয়েক আঘাত করার পরে রাজেশের মৃত্যু হয়। এর পরে তিন জন মিলে দোমদহ ও ধাঙ্গুরি গ্রামের সংযোগস্থলে একটি জঙ্গলে মাটি খুঁড়ে রাজেশের দেহ পুঁতে দেন। পরে, রাজেশের মোটরবাইকে চেপেই তিন জন নিজেদের গ্রাম মুচিডিতে ফিরে আসেন। মোটরবাইকটি রাস্তার পাশে একটি পরিত্যক্ত কুয়োতে ফেলে দেওয়া হয়। পুলিশ এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে দেহটি উদ্ধার করে। তদন্তে নেমে পুলিশের অনুমান, সম্পর্কগত কোনও টানাপড়েনের জেরেই এই ‘খুন’ হয়ে থাকতে পারে। যদিও, এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বন্দনা। তবে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “যারা স্বামীকে খুন করল, তাদেরশাস্তি চাই।”
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী শনিবার বলেন, “ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কিছু তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।” আসানসোল জেলা হাসপাতালে দেহটির ময়না-তদন্ত করিয়েছে পুলিশ।