আসানসোলে পুলিশের হকার উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশের পরে জেলা জুড়ে জায়গা দখলমুক্ত করতে অভিযান শুরু হয়েছে। তবে সমীক্ষা শুরুর মাঝে এক দিনের মধ্যে উঠে যাওয়ার নোটিসে ক্ষুব্ধ আসানসোলের বার্নপুর রোডের দু’পাশের হকারেরা। তাঁদের দাবি, আসানসোল পুরসভার তরফে সম্প্রতি এলাকায় সমীক্ষার পরে ভোটার ও আধার কার্ড নেওয়া হয়েছে। এর পরে তাঁদের এক দিনের নোটিসে উঠে যেতে বলা হচ্ছে। পুরসভার অন্যতম ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হক জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শহরে হকার সমীক্ষা শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ এসিপি (সদর) বিশ্বজিৎ নস্কর আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশকে নিয়ে বিএনআর থেকে আদালত পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশের হকারদের রবিবারের মধ্যে উঠে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তা না হলে দোকান ভেঙে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। হকারদের দাবি, তাঁরা ফুটপাত দখল করে দোকান করেননি। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন পর্ষদ থেকে সংযোগ নিয়েছেন। ফুটপাত দখল করলে বিদ্যুৎ সংযোগ পেতেন না। প্রায় তিরিশ বছর ধরে দোকান রয়েছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি উত্তম মণ্ডলের। তাঁর দাবি, “সম্প্রতি পুর কর্তৃপক্ষ সমীক্ষা করে আমাদের ভোটার ও আধার কার্ড নিয়ে গিয়েছেন। উচ্ছেদের আগে সময় দেওয়া হবে জানিয়েছিলেন। আজ হঠাৎ পুলিশের তরফে দোকান তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল। না হলে বুলডোজ়ার চালিয়ে ভেঙে দেবে বলেছে।” আর এক ব্যবসায়ী মানিক গড়াইয়ের দাবি, “ফুটপাত থেকে আরও ১০ ফুট ছেড়ে দোকান করেছি।”
ওয়াসিমুল হক বলেন, “হাকারদের ব্যবসা বন্ধ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শহর জুড়ে হকার-সমীক্ষা শুরু হয়েছে। তাঁদের কী ব্যবস্থা করা যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।” এ দিনের অভিযান নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে পুলিশ জানায়, সরকারি জমি দখলমুক্ত করতেই এই অভিযান। পুলিশ সূত্রের দাবি, বার্নপুর রোডে নতুন একটি কমিশনারেট কার্যালয় তৈরি করা হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেটির উদ্বোধন হবে। সামনের অংশ সৌন্দর্যায়নের জন্য এই রাস্তার দু’পাশের জমি ফাঁকা করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ দিন ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযান চালায় কাঁকসার বাঁশকোপায়। ছিলেন বাঁশকোপা টোলপ্লাজ়ার ম্যানেজার পবন সিংহ ও রবি দুবে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁশকোপা টোলপ্লাজ়া তৈরি হওয়ার পরে তার দু’দিকের রাস্তার দু’পাশে বহু অস্থায়ী দোকান গড়ে ওঠে। টোলপ্লাজ়ার আশপাশে রয়েছে গোপালপুর, বামুনাড়া, বাঁশকোপা শিল্পতালুক। ফলে, এই জায়গায় গাড়ির চাপ অনেক বেশি থাকে। অভিযোগ, বহু গাড়ি এ সব দোকানের সামনে দাঁড়ায়। ট্রাক, ডাম্পার, ছোট গাড়ি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে, টোলপ্লাজ়ার দু’দিকে রাস্তা সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়ে।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানান, ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৬০টি অস্থায়ী দোকান গড়ে উঠেছিল। এ দিন সেগুলি উচ্ছেদ করা হয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, উচ্ছেদের আগে ওই সব দোকানের মালিকদের উঠে যেতে বলা হয়েছিল। সড়ক কর্তৃপক্ষের ম্যানেজার (রুট অপারেশন) প্রিয়াংশু সিংহ জানান, কাঁকসা থানার পুলিশকে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। সড়কের জায়গা যাঁরা দখল করেছেন, সকলকেই উচ্ছেদ করা হবে।