বাইক বদলে, ‘ট্র্যাকার’ পুকুরে ফেলে চম্পট

পুলিশ সুপার (পূর্ব বর্ধমান) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। আন্তঃরাজ্য দুষ্কৃতীদের যোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০ ০৪:২৭
Share:

খণ্ডঘোষে ‘জিপিএস ট্র্যাকার’ খোঁজার কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র

স্বর্ণ-ঋণ সংস্থায় লুটের ঘটনায় আন্তঃরাজ্য দুষ্কৃতীদের যোগ রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত করতে জেলা পুলিশকে সাহায্য করছে সিআইডি। যোগাযোগ রাখা হচ্ছে পড়শি রাজ্যের পুলিশের সঙ্গেও। পুলিশের দাবি, অত্যন্ত পেশাদার বলেই সোনার সঙ্গে মিশে থাকা ‘জিপিএস ট্র্যাকার’ খুলে পানাপুকুরে ফেলে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

Advertisement

পুলিশ সুপার (পূর্ব বর্ধমান) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। আন্তঃরাজ্য দুষ্কৃতীদের যোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।’’

শুক্রবার দুপুরে বর্ধমান থানার নাকের ডগায় একটি স্বর্ণঋণ সংস্থায় আধ ঘণ্টা ধরে লুটপাট চলে। বেরনোর সময়ে বাধা পেয়ে এক টোটো চালককে গুলি, মাথায় পিস্তলের বাঁট দিয়ে আঘাতও করা হয়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই টোটো চালক চিকিৎসাধীন। তবে শনিবারও আতঙ্কের রেশ কাটছে না বিসি রোডের বড়বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

Advertisement

ওই স্বর্ণ-ঋণ সংস্থার বর্ধমানের বড়বাজারের ম্যানেজার কৌশিক ঘোষ ঘটনার কথা জানিয়ে এফআইআর করেছেন। তাঁর দাবি, ২৯ কেজি ৫০০ গ্রাম সোনা লুট হয়েছে। দুষ্কৃতীরা হিন্দিতে কথা বলছিল বলেও তাঁর দাবি। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, এক জন মাঝেমধ্যে বাংলায় কথা বলছিল। পুলিশের কর্তারা জানান, ভরা বাজারের মধ্যে যে ভাবে ‘ঝুঁকি’ নিয়ে দুষ্কৃতীরা লুট করেছে, গুলি চালিয়েছে তাতে এটা নিশ্চিত তাঁরা খুবই পেশাদার। না হলে, সোনা লুটের পর সোনালি রংয়ের ‘ট্র্যাকার’ আলাদা করতে পারত না। পুলিশকে বোকা বানানোর জন্য সেটি পানা পুকুরে ফেলেও দিত না। জেলা পুলিশ জিপিএস-এর সাহায্যে ওই ‘ট্র্যাকার’-এর সিগন্যাল পায় খণ্ডঘোষের বাদুলিয়ার একটি পুকুরে। তবে ওই পুকুরে তল্লাশি চালিয়েও ‘ট্র্যাকার’ উদ্ধার হয়নি।

কয়েকমাস আগে বর্ধমান শহরে একের পরে এক কেপমারির ঘটনায় পুলিশ মধ্যপ্রদেশের একটি চক্রের হদিস পেয়েছিল। মধ্যপ্রদেশের বুরহানপুর থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়। তার পর থেকে বেশ কিছু দিন কেপমারি বন্ধ ছিল। যদিও পুলিশের এক কর্তার কথায়, “ওই চক্রের সঙ্গে বড়বাজারের ঘটনার মধ্যে আকাশপাতাল পার্থক্য। বড়বাজারের ঘটনায় জড়িতরা সংখ্যায় অনেক বেশি। ঝুঁকিও বেশি নিয়েছে। এক বার লুট করতে পারলে সারাজীবন কার্যত কিছু করতে হবে না বলে ওই দুষ্কৃতীরা ভয়ডরহীন ছিল।’’ পুলিশের ধারণা, লুট করার আগে বেশ কয়েকবার ‘রেইকি’ (সরেজমিনে নজরদারি) করে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ওই সংস্থার এক কর্মী বলেন, “যে দু’জন প্রথমে ঢুকেছিল, তাঁরা বন্ধকি সোনা ছাড়ানোর কথা বলছিলেন।’’

পুলিশের ধারণা, যে সব মোটরবাইকের নম্বর মিলেছে, সবই ভুয়ো। রাস্তার মধ্যে দুষ্কৃতীরা বারবার মোটরবাইক বদলেছে। এখনও পর্যন্ত পুলিশের অনুমান, মাধবডিহি থানার একলক্ষ্মীর দ্বারকেশ্বরের সেতু পার হয়ে হুগলির গোঘাট হয়ে বেরিয়ে গিয়েছে তারা। জেলা জুড়ে নাকা-তল্লাশিও করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement