“ব্লু হোয়েল গেমের নাম শুনেছ?’’— খুব ধীরে প্রশ্নটা করলেন জেলা পুলিশের এক কর্তা।
কলেজ পড়ুয়াদের কয়েকজন জানালেন, তাঁরা শুনেছেন একের পর এক চ্যালেঞ্জ টপকে মৃত্যুর কাছে টেনে নিয়ে যায় ওই খেলা। মাঝপথে সরে এলে বিপদের ভয় দেখানো হয়।
এ বার পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল তাঁদের জানালেন, ইতিমধ্যে জার্মানি থেকে ওই খেলার ‘কিউরেটর’ গ্রেফতার হয়েছেন। তার আগে মস্কো থেকে ধরা পড়েছে গেমের ‘অ্যাডমিন’। খেলার কোনও লিঙ্ক পেলেও তা নিয়ে উৎসাহী হওয়া বা খোঁজ করার দরকার নেই বলেও জানালেন তিনি।
মঙ্গলবার মেমারি কলেজে ‘সাইবার ক্রাইম’ নিয়ে একটি সচেতনামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল পুলিশ। সেখানেই ব্লু হোয়েল নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেন কর্তারা। অনুষ্ঠান শেষে মেমারি কলেজের পড়ুয়া শান্ত রায় কিংবা জাহানা খাতুনেরা ঠিক করে, নিজেরা তো খেলবেই না অন্য কেউ নীল তিমির হাতছানিতে সাড়া দিচ্ছে জানলেও আটকাবে তাঁরা। এ দিনই ভাতারের একটি স্কুলের পড়ুয়াদেরও সচেতন করেন পুলিশ কর্তারা।
ব্লু হোয়েল গেম নিয়ে এ রাজ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, কলকাতায় একাধিক কিশোর-কিশোরীর খোঁজ মিলেছে যাঁরা এই খেলায় আসক্ত। পূর্ব বর্ধমানে এখনও কোনও ঘটনা সামনে না এলেও ঝুঁকি নিতে নারাজ পুলিশ। সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে ওই খেলা নিয়েও কমবয়েসীদের সচেতন করতে শুরু করেছেন পুলিশ আধিকারিকেরা।
পুলিশের দাবি, এই খেলায় জড়িয়ে গেলে হঠাৎ করে ছেলে বা মেয়ের মধ্যে পরিবর্তন দেখা দেবে। যেমন, বন্ধুবান্ধব ছেড়ে মোবাইল নিয়ে একা থাকা, মাঝরাতে উঠে ভয়ের সিনেমা দেখার নেশা হবে। আবার খেলায় বেশ কিছুটা এগিয়ে গেলে হাতে রক্ত দিয়ে তিমি মাঝের ছবি আঁকার ঘটনাও ঘটবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “ছেলেমেয়ের মধ্যে কোনও বদল দেখা গেলেই নজরে রাখতে হবে। আমাদেরও জানাতে হবে।”
অন্য গেমের মতো স্মার্টফোনে ডাউনলোড করা যায় না এই গেম। সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু গ্রুপ থেকে খেলার লিঙ্ক পাঠানো হয়। গ্রুপের ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা কিউরেটর’ কিছু প্রশ্ন করে টিনএজারদের বেছে নেন। তারপর আসতে থাকে একের পর এক নির্দেশ। ৫০টি চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হয়। শেষ ধাপ আত্মহত্যা। পুলিশ সুপার বলেন, “গোটা জেলা জুড়েই ওই খেলা থেকে সতর্ক থাকার জন্য কলেজে প্রচার চালানো হবে। পড়ুয়ারাও সতর্ক করবেন অন্যদের।”