খুনের কিনারা অধরাই
Unnatural Death

হদিস নেই নিহত তরুণীর ফোনেরও

১৪ অগস্ট রাতে বর্ধমানের নান্দুরের ঝাপানতলায় বাড়ির পিছনে খেতজমিতে খুন হন প্রিয়াঙ্কা হাঁসদা (২৫)। গলার নলি কাটা অবস্থায় পুলিশ তাঁর দেহ মেলে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৫
Share:

প্রিয়াঙ্কা হাঁসদাকে খুনে দোষীকে গ্রেফতারের দাবিতে জনজাতি সংগঠনের মিছিল গুসকরায়। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়।

রাজ্যের পশ্চিম প্রান্তের কয়েকটি জেলা, তার সঙ্গে পড়শি রাজ্যেও জাল বিছিয়ে রেখেছে পুলিশ। কিন্তু সপ্তাহ কাটতে চললেও সেই জালে সন্দেহভাজন কেউ ধরা পড়েনি। বর্ধমানের নান্দুরে জনজাতি তরুণী খুনের ঘটনায় পুলিশের দাবি, বাড়ির লোক প্রথমে সূত্র দিলে সন্দেহভাজনকে ধরা যেত। কিন্তু মোবাইলের সূত্র ধরে ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করতে সময় লেগে গিয়েছে। তদন্তকারীরা তাঁর খোঁজ করছেন বুঝতে পেরে সন্দেহভাজন মোবাইল-বর্জিত হয়ে আত্মগোপন করেছেন।

Advertisement

১৪ অগস্ট রাতে বর্ধমানের নান্দুরের ঝাপানতলায় বাড়ির পিছনে খেতজমিতে খুন হন প্রিয়াঙ্কা হাঁসদা (২৫)। গলার নলি কাটা অবস্থায় পুলিশ তাঁর দেহ মেলে। আততায়ীকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে জনজাতিদের বিভিন্ন সংগঠন। রবিবার শক্তিগড়ের কাছে ৫ ঘণ্টা দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ হয়। মঙ্গলবারও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তির-ধনুক, ধামসা-মাদল নিয়ে ভারত জাকাত মাঝি পরগণা অবরোধ, বিক্ষোভ করে। জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ওই সংগঠনের নেতারা রবিবার পুলিশ সুপার আমনদীপের সঙ্গে দেখা করে আততায়ীকে দশ দিনের মধ্যে গ্রেফতারের দাবি করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার ‘ঘনিষ্ঠ’, ভিন্‌ জেলার এক যুবককে সন্দেহভাজন তালিকায় রেখে তদন্ত করা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, ঘটনার দিন ওই যুবককে নান্দুর গ্রামে দেখা গিয়েছে। কিন্তু নিহত যুবতীর পরিজন, বন্ধু-বান্ধবীরাও সে কথা জানিয়েছেন। জেলা পুলিশ এএসপি (বর্ধমান সদর) অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে। সিটের সদস্যেরা একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে জাল বিছিয়েছেন। কয়েকটি জায়গায় হানা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সন্দেহভাজনের খোঁজ মেলেনি।

Advertisement

তদন্তকারীদের দাবি, নিহতের মোবাইল নিয়ে পগারপাড় হয়ে গিয়েছেন আততায়ী। নিহতের বাবা, মা বা ভাই ঘটনার প্রথম দু’দিন মুখ খোলেননি। পুলিশ প্রযুক্তির সাহায্যে মোবাইলের তথ্য বার করা থেকে সিসি ক্যামেরায় দেখে সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করেছে। অর্ক বলেন, “আমরা সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছি। প্রচুর দল তৈরি করে খোঁজা হচ্ছে। আশা করছি, এই খুনের সমাধান তাড়াতাড়ি করে
ফেলতে পারব।” নিহতের বাবা সুকান্ত হাঁসদা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সন্ধে ৭.৩০ থেকে ৭.৫০-র মধ্যে খুন হয়েছে মেয়ে। ঘটনার দিন দুপুরে প্রিয়াঙ্কা আধার ‘লিঙ্ক’ করাতে পঞ্চায়েত অফিসেও গিয়েছিলেন। পুলিশের প্রশ্ন, যে জায়গায় প্রিয়াঙ্কার দেহ মিলেছে, সেই জায়গা সম্পর্কে পরিচিত না হলে যাওয়া সম্ভব নয়। গ্রামের কোন রাস্তা থেকে আলপথ ধরে প্রিয়াঙ্কাদের বাড়ির পিছনে যাওয়া যায়, তা বিলক্ষণ জানতেন আততায়ী। তাহলে কী ওই দিন দুপুরেও প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে সন্দেহভাজনের দেখা হয়েছিল, উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। তবে পুলিশের জেলা কেউ না ধরা পড়লে উত্তর অজানাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement