উৎপল রায়। —নিজস্ব চিত্র।
বেআইনি ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে গণেশ ওরফে উৎপল রায় নামে এক জনকে গ্রেফতার করল দুর্গাপুর থানা। সোমবার রাতের ঘটনা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই উৎপল এলাকার পরিচিত কয়লা-‘কারবারি’ নিহত রাজু ঝায়ের ছায়াসঙ্গী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পাশাপাশি, উৎপলের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও শুরু হয়েছে তরজা। তৃণমূলের দাবি, তিনি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। যদিও, বিজেপির দাবি, উৎপলের সঙ্গে দলের কোনও যোগাযোগ নেই।
দুর্গাপুর থানা জানিয়েছে, ওই রাতে মেন গেট এলাকা থেকে বেনাচিতির মহিষ্কাপুরের বাসিন্দা উৎপলকে ধরা হয়। পুলিশের দাবি, ধৃতের থেকে একটি দেশি পাইপগান, দু’রাউন্ড কার্তুজ মিলেছে। ধৃতকে মঙ্গলবার দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় বছর ১৫ আগে রাজুর হাত ধরেই ‘উত্থান’ উৎপলের। রাজুর ব্যবসা ও পারিবারিক নানা সিদ্ধান্তেও না কি মতামত জানাতেন এই উৎপল। এমনকি, গত ১ এপ্রিল শক্তিগড়ের কাছে রাজু খুন হওয়ার পরে, তাঁর পেট্রল পাম্প, কাঁটা-সহ নানা বৈধ ব্যবসার দেখভাল করছিলেন উৎপলই। তবে উৎপলের ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, রাজুর সঙ্গে তিনিও কয়লার কারবার থেকে সরে এসেছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫-য় বেনাচিতিতে একটি জায়গা থেকে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় উৎপল এক বার গ্রেফতারও হয়েছিলেন। তার আগে কয়লা পাচার সংক্রান্ত মামলাতেও পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। দুর্গাপুর থানা ছাড়াও বিভিন্ন থানায় অবৈধ কয়লার কারবার নিয়ে নানা মামলায় নাম
রয়েছে উৎপলের।
এ দিকে, উৎপলের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও শুরু হয়েছে তরজা। স্থানীয় সূত্রেই জানা যাচ্ছে, রাজু ২০২০-র ২১ ডিসেম্বর বিজেপির তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত ধরে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। সে সময় উৎপলও বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এই সূত্র টেনেই জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের তোপ, “ধৃত ব্যক্তি বিজেপি করতেন। বিজেপির অনেক মিটিং-মিছিলে তাঁকে দেখা গিয়েছে। আসলে বিজেপির সংস্কৃতিই হল এমন লোককে দলে নেওয়া।” যদিও, বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ দত্তের বক্তব্য, “এক সময় অনেকেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে উৎপলের সঙ্গে দলের এই মুহূর্তে কোনও যোগাযোগ ছিল না।”