দফতরের গা ঘেঁষে বইছে ভাগীরথী। সীতাহাটিতে। নিজস্ব চিত্র
গ্রামের একাংশ ভাঙনের কবলে পড়েছে আগেই। এ বার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পঞ্চায়েত ভবন নিয়ে। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম ২ ব্লকের সীতাহাটি পঞ্চায়েত অফিসের অদূরেই বয়ে যাচ্ছে ভাগীরথী। পঞ্চায়েতের কর্তারা থেকে স্থানীয় বাসিন্দা, অনেকেরই দাবি, কয়েক ফুট পাড় ভাঙলেই বিপন্ন হবে অফিস। বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন পঞ্চায়েতের কর্তারাও।
সীতাহাটি পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে থেকে এলাকার একাংশ নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। ভাগীরথীর কোল ঘেঁষে থাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে নৈহাটি, বজরাডাঙা, শাঁখাই, বেনেপাড়া, নলিয়াপুরের মতো গ্রামগুলিতে। যত দিন যাচ্ছে, পাড় ভেঙে ভাগীরথী বসতি এলাকার কাছাকাছি চলে আসছে। কাটোয়া শহর থেকে শাঁখাই ঘাট থেকে উদ্ধারণপুর হয়ে যে রাস্তাটি মৌগ্রামের দিকে গিয়েছে, সেটিও ভাঙনের মুখে পড়েছে। রাস্তাটি রক্ষা করতে হলে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে দাবি বাসিন্দাদের অনেকের।
এলাকাবাসী জানান, নৈহাটি গ্রামের প্রাথমিক স্কুলটির কাছাকাছি চলে এসেছে নদী। স্কুলবাড়ি ভাঙনের কবলে পড়লে গ্রামের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে বলে তাঁদের আশঙ্কা। একই রকম পরিস্থিতি শাঁখাই, নলিয়াপুর, বজরাডাঙা ও বেনেপাড়া গ্রামেও। সেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইতিমধ্যে বেশ কিছু বাড়ি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। প্রতি বর্ষায় ভাঙনের মাত্রা বাড়ছে।
এ বার সঙ্কট তৈরি হয়েছে পঞ্চায়েত অফিসটি নিয়েই। সীতাহাটির বাসিন্দা প্রণবেশ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘আর মাত্র সাত-আট ফুট পাড় ভাঙলেই পঞ্চায়েত ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এলাকার আরও কয়েকটি জায়গা ভাঙনের মুখে পড়ছে। আরএলআই পাম্পহাউস থেকে স্কুল, বেশ কিছু বাড়ি জলে তলিয়ে যাওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে মনে হচ্ছে।’’ সীতাহাটি পঞ্চায়েতের প্রধান বিকাশ বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় পঞ্চায়েত ভবনটি নিয়ে আমরা খুব চিন্তার মধ্যে রয়েছি। কয়েক হাত পাড় ভাঙলেই ভবনটি ভাগীরথীতে তলিয়ে যেতে পারে।’’ তাঁরও দাবি, অন্য কয়েকটি গ্রামেও ভাঙন বাড়ছে। পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ বলেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েত ভবনটি ভাঙনের মধ্যে পড়ার আশঙ্কার কথা শুনেছি। এ নিয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল জানান, ‘‘বিষয়টি নিয়ে সেচ দফতর ও ব্লক প্রশাসনকে বিশদ রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’’