ছবি: সংগৃহীত।
আসানসোল পুরসভার ১০৪ ও ১০৫ নম্বর ওয়ার্ড অর্থাৎ ডিসেরগড়ের পানীয় জলের মূল উৎস দামোদর নদ। কিন্তু এই এলাকার বর্জ্য মিশ্রিত জল নালা-নর্দমা হয়ে সরাসরি নদে পড়ায় জলে দূষণ বাড়ছে বলে অভিযোগ। অবশেষে দামোদরের দূষণ কমাতে উদ্যোগী হয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিসেরগড় অঞ্চলের বর্জ্য মিশ্রিত জল পরিশোধন করে দামোদরে ফেলতে একটি প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য তথা জল দফতরের বিদায়ী মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায় বলেন, ‘‘প্রকল্পের খরচ জোগাড় হলেই কাজে হাত পড়বে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দামোদর নদের জল পরিশোধনের পরে পানীয় যোগ্য করে ডিসেরগড়ে সরবরাহ করে ইসিএল। ১০৪ ও ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুই বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর ইন্দ্রানী আচার্য ও অভিজিৎ আচার্য জানিয়েছেন, এই দুই ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বর্জ্য মিশ্রিত জল দামোদরে ফেলার আগে পরিশোধন করার দাবি দীর্ঘদিনের। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের দাবি মেনে একটি পরিশোধন কেন্দ্র গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তা গৃহীত হয়েছে।’’
এ দিকে, দামোদর নদের দূষণ নিয়ে বরাবরই সরব হয়েছেন শিল্পাঞ্চলের পরিবেশ কর্মীরা। স্থানীয় পরিবেশ কর্মী অতনু ভরদ্বাজের দাবি, ডিসেরগড় থেকে শুরু করে বার্নপুরের ভুতাবুড়ি, শ্যামডিহি, ডিহিকা পর্যন্ত নদের দুপারে লাগাম ছাড়া দূষণ রয়েছে। প্ল্যাস্টিক-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার বর্জ্য মিশ্রিত জল নালা-নর্দমা হয়ে দামোদরে সরাসরি পড়ছে। সম্প্রতি এই এলাকায় দামোদরের দূষণ কমাতে প্লাস্টিক-সহ অপচনশীল সামগ্রী পরিষ্কার করার অভিযানে নেমেছিল শিল্পাঞ্চলের একটি পরিবেশ সচেতক সংগঠন। ওই সংগঠনের অন্যতম সদস্য সপ্তর্ষি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এক সময়ে দামোদরের তীরে প্রচুর পরিযায়ী পাখির মেলা বসত। কিন্তু নদের লাগাম ছাড়া দূষণে পাখির সংখ্যা অনেক কমেছে।’’ তাই দূষণ রোধ করতে না পারলে পাখি আসা বন্ধই হয়ে যাবে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশ কর্মীরা। স্বভাবতই এই পরিস্থিতে পুরসভার উদ্যোগকে স্বাগত জানান তাঁরা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন যেখানে ইসিএলের জল প্রকল্পটি রয়েছে তার কাছাকাছি প্রায় ১০ বিঘা খাস জমির সন্ধান মিলেছে। সেখানেই এই পরিশোধন কেন্দ্রটি গড়ে তোলার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিদায়ী মেয়র পারিষদ পূর্ণশশীবাবু জানিয়েছেন, এই দুই ওয়ার্ডের সমস্ত নালা ও নর্দমা ওই পরিশোধন কেন্দ্রের সঙ্গে জোড়া হবে। এর ফলে বর্জ্য মিশ্রিত জল দামোদরে সরাসরি পড়বে না।