প্রতীকী ছবি
নেতৃত্বে রদবদলের সাত দিনের মধ্যেই সর্ব স্তরের পুরনো কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব। সেই মতো পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল-সহ সমস্ত শাখা সংগঠনের সব স্তরের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়ে, নতুন জেলা কমিটি এবং একই সঙ্গে যুব তৃণমূলের জেলা কমিটি ঘোষণা করা হবে। দলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে সব পুরনো কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত নতুন কমিটি ঘোষণা হবে।’’
গত ২৩ জুলাই জেলা তৃণমূলের সংগঠনে রদবদলের কথা জানান দলের রাজ্য নেতৃত্ব। দলের জেলা চেয়ারম্যানের পদে আনা হয় রাজ্যের মন্ত্রী তথা বিধায়ক (আসানসোল উত্তর) মলয় ঘটককে। জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে সভাপতি পদে রেখে দেওয়া হয়। জেলা ‘কো-অর্ডিনেটর’ হয়েছেন দুর্গাপুরের বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও কেকেএসসি নেতা হরেরাম সিংহ। পাশাপাশি, রাজ্যের সম্পাদকদের মধ্যে আনা হয়েছে সদ্য প্রাক্তন জেলা ‘কো-অর্ডিনেটর’ ভি শিবদাসনকে।
এর পরেই তৃণমূলের জেলা কমিটি-সহ শাখা সংগঠনের পুরনো সব কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই নির্দেশ কার্যকর করা হয় বলে দল সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, আগের মতোই জেলার ন’টি বিধানসভা এলাকায় এ বারও ১৮টি ব্লক কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এর মধ্যে বারাবনিতে তিন, কুলটিতে এক ও বাকি আসানসোল উত্তর, আসানসোল দক্ষিণ, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুর পূর্ব ও দুর্গাপুর পশ্চিমে দু’টি করে ব্লক কমিটি তৈরি হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে জেলা কমিটির পাশাপাশি, গুরুত্ব পাচ্ছে ব্লক কমিটিগুলিও। ব্লক কমিটিগুলির পদাধিকারী ও সদস্য নির্বাচনের দায়িত্ব ছাড়া হয়েছে বিধায়কদের উপরেই। কারণ, নির্বাচনে জিততে বিধায়কেরা কোন-কোন নেতা-কর্মীকে কী ভাবে কাজে লাগাবেন তা একান্ত ভাবেই তাঁদের উপরে নির্ভর করছে। যেখানে দলের বিধায়ক নেই, সেখানে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীকে সামনের সারিতে এনে কমিটি নির্বাচনের উপরে জোর দেওয়া হবে। ব্লক স্তরে সে কাজটি ইতিমধ্যেই শুরু করে দেওয়া হয়েছে। রবিবারই নিজের বিধানসভা এলাকার ৩২টি ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কমিটির নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয়বাবু। সে দিনই তিনি জানিয়েছিলেন, বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি হিসেবেই দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক হচ্ছে। সাধারণ মানুষের বাড়ি গিয়ে সমস্যা জেনে সমাধান করার পাশাপাশি, পুরনো কর্মীদের গুরুত্ব দিয়ে সংগঠনের কাজে নামানোর পরিকল্পনা হয়েছে। একই ভাবে উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে দলের বাকি বিধায়কেরাও নিজেদের এলাকার নেতা-কর্মীদের বৈঠক ডেকে ব্লক কমিটির সম্ভাব্য পদাধিকারী ও সদস্যদের নামের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘নতুন কমিটি গঠন করে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন আনার পরেই তা ঘোষণা করা হবে।’’ তৃণমূলের জেলা ও ব্লক কমিটি তৈরির সঙ্গে সমান গুরুত্ব পাচ্ছে যুব তৃণমূলের কমিটি গঠন নিয়েও। দ্রুত যুব তৃণমূলেরও সর্ব স্তরের কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের নব নিযুক্ত সভাপতি রূপেশ যাদবও।