Coronavirus Lockcdown

রাস্তায় বাস না নামায় ভরসা মোটরভ্যান, চড়া ভাড়ায় গাড়ি

হাটবাজার, চিকিৎসা-সহ নানা প্রয়োজনে নানা গ্রাম থেকে অনেকে কালনায় আসেন। বাস না চলায়, তাঁরা বিপাকে পড়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০৬:৪৩
Share:

ভ্যানে যাত্রা। বর্ধমান-আরামবাগ রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

বেসরকারি বাস রাস্তায় নামেনি মঙ্গলবার পর্যন্ত। সরকারি বাসও হাতে গোনা। ফলে, রাস্তায় বেরিয়ে চূড়ান্ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ বর্ধমান শহর থেকে কাটোয়া বা গলসি, সব এলাকার যাত্রীদেরই। কেউ চড়া দরে গাড়ি ভাড়া করছেন, কেউ আবার সওয়ার হয়েছেন পিক-আপ ভ্যান বা মালবাহী গাড়িতে।

Advertisement

সোমবারের পরে মঙ্গলবারও রাস্তায় নামেনি কোনও বেসরকারি বাস। বর্ধমান শহর ও শহরতলিতে ‘টাউন সার্ভিস’ বাস পরিষেবাও চালু হয়নি। যাত্রী শেখ মোহম্মদ মুস্তফা, রাজু চৌধুরী, মিঠুন মল্লিকেরা জানান, রাস্তায় বেরিয়ে বাস না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। মোটরভ্যান বা অন্য যানবাহনে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে। বর্ধমানের আলিশা ও নবাবহাট, এই দু’টি বাসস্ট্যান্ড থেকে এ দিন কোনও বাস ছাড়েনি। জেলার দক্ষিণ দামোদর এলাকাতেও কোনও বাসের দেখা মেলেনি।

হাটবাজার, চিকিৎসা-সহ নানা প্রয়োজনে নানা গ্রাম থেকে অনেকে কালনায় আসেন। বাস না চলায়, তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। মঙ্গলবার কালনার বাসস্ট্যান্ডে খোঁজ নিতে এসেছিলেন সুলতানপুর এলাকার চাষি নাজির শেখ। তাঁর কথায়, ‘‘বাস না চলায় ৮০০ টাকায় গাড়ি ভাড়া করে পরিবারের এক জনকে চিকিৎসকের কাছে আনতে হয়েছে। কবে থেকে বাস পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, খোঁজ নিতে এসেছিলাম। কিন্তু কেউ কিছু জানাতে পারেননি।’’ কালনা ১ ব্লকের এক সরকারি দফতরের কর্মী বলেন, ‘‘বাস না চলায় যাতায়াতের জন্য মোটরবাইক কিনতে হয়েছে। কাজে তো যেতেই হবে।’’

Advertisement

কাটোয়ার বাসিন্দা শৈলেশ দত্ত বলেন, ‘‘আমি বোলপুর, রামপুরহাট-সহ নানা জায়গায় গিয়ে ওষুধের কারবার করি। এখন বাস চলবে ভেবে স্ট্যান্ডে এসেছিলাম। কিন্তু জানতে পারি, বাস কবে চলবে কিছু ঠিক নেই। জরুরি কাজ থাকায় বাধ্য হয়ে দেড় হাজার টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করেছি।’’ অভিজিৎ বিশ্বাস নামে আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘কাজের জন্য পারুলিয়া বাজারে যেতে হয়। বাস না চলায় কোনও দিন পিক-আপ ভ্যান, কোনও দিন মোটরবাইকে যেতে হচ্ছে।’’ তাঁদের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালানো উচিত। না হলে সাধারণ মানুষের সমস্যা বাড়বে।

বাস মালিকদের অনেকের অবশ্য দাবি, ট্রেন না চলায় যাত্রী কতটা হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তা ছাড়া, শুধু আসন সংখ্যার সমান যাত্রী নেওয়া যাবে বলে নির্দেশ রয়েছে। তাতে বাস চালানো লাভজনক হবে কি না, সন্দেহ রয়েছে। এ ছাড়া এখন ‘মাস্ক’ ও ‘স্যানিটাইজ়ার’ দেওয়ার বাড়তি খরচ রয়েছে। দু’মাসের বেশি সময় ধরে রাস্তায় না নামায় বাসগুলিকে চলাচলের উপযোগী করতেও ৭-১০ হাজার টাকা করে খরচ হবে বলে তাঁদের দাবি।

জেলার বাস মালিকদের একটি সংগঠনের এক কর্তা তুষার ঘোষ জানান, এ দিন মালডাঙা-মেমারি রুটে অল্প সংখ্যায় বাস চলেছে। তবে বাকি এলাকায় কোনও বাস চলেনি। জেলা বাস মালিক সংগঠনের সভাপতি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘জেলায় ১,৫৬০টি বেসরকারি বাস চলে। বিভিন্ন রুটে বাস চালানোর জন্য সরকারি কতটা সাহায্য মেলে, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছি আমরা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement