রামকৃষ্ণডাঙালের এই এলাকাতেই ঘটেছিল পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা। ফাইল চিত্র
আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমানে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে রামকৃষ্ণডাঙালের কম্বল কাণ্ডে পদপিষ্ঠ হওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার করেছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই, যেখানে ঘটনা ঘটেছিল, সেই রামকৃষ্ণডাঙালে নীরবতা দেখা গিয়েছে। তবে, বিষয়টি নিয়ে তীব্র তরজা শুরু হয়েছে বিজেপি ও তৃণমূলে।
শনিবার সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণডাঙালে গিয়ে দেখা গেল, কার্যত সবাই মুখে কুলুপ এঁটেছেন। স্থানীয় একটি দোকানের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক জনকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা বলেন, “যাঁরা মারা গিয়েছিলেন, তাঁরা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারে।”
যেখানে ওই ঘটনা ঘটেছিল, তার থেকে কিছুটা দূরেই থাকতেন চাঁদমণি যাদব (৫০)। সে দিন পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। জিতেন্দ্রের গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে চাঁদমণির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তাঁরা কোনও মন্তব্য চাননি। কোনও মন্তব্য করতে চাননি সে দিনের ঘটনায় মৃত ১১ বছরের প্রীতি সিংহের মা কিরণ সিংহও। পাশাপাশি, ওই ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন আসানসোলের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাল্লার বাসিন্দা ঝালি বাউড়ি (৬০)। ঝালির ছেলে সুখেনই কম্বল বিতরণ কর্মসূচির আয়োজকদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই মামলা হয় এবং এ দিন জিতেন্দ্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ফোনে সুখেনের স্ত্রী পূর্ণিমা বাউড়ি জিতেন্দ্রের গ্রেফতার হওয়া নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে তিনি জানান, এই মুহূর্তে বাড়িতে নেই সুখেন।
এ দিকে, জিতেন্দ্রের গ্রেফতার হওয়ার খবর শুনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্য ও জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের বক্তব্য, “আইনের উপরে আমাদের ভরসা আছে। পরিবারের পাশে আছি। রাজ্যে এমন বহু ঘটনা ঘটেছে। কোথাও পুলিশের এমন তৎপরতা দেখা যায়নি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিজেপির সদস্য বলেই তাঁকে (জিতেন্দ্র) জেলে ঢোকানোর এমন উদ্যোগ।” পাশাপাশি, বীরভূমে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসে সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও তৃণমূলের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তোলেন। তাঁর কথায়, “জিতেন্দ্র তিওয়ারি মানুষের জন্য কম্বল বিলি করছিলেন। সেখানে পুলিশ-প্রশাসনের যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরও দায়িত্ব থাকা উচিত ছিল। রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণ করতে আমাদের নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” যদিও বিজেপির তোলা অভিযোগে আমল দেননি তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন। তাঁর কথায়, “অন্যায় করলে সাজা পেতেই হবে। সে দিন তিন জনের প্রাণ গিয়েছিল।” তবে জেলা বিজেপি জানিয়েছে, আজ, রবিবার আসানসোলে জিতেন্দ্রকে তোলার মুহূর্তে দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন।