জিটি রোড অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে জেরবার নিয়ামতপুরের প্রায় পঞ্চাশ হাজার বাসিন্দা। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার দাবিতে শনিবার রাতে কয়েকশো বাসিন্দা প্রায় দেড় ঘণ্টা জিটি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ ও স্থানীয় কাউন্সিলর মীর হাসিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। ঘনঘন লোডশেডিং নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি বিদ্যুৎ দফতরের বরাকার শাখার আধিকারিকেরা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় একমাস ধরে তাঁরা চরম বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরে বার বার জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়ামতপুর বাজার এলাকা থেকে লছিপুর, বেলরুই, রায়পাড়া, ব্রহ্মচারিস্থান, নবিনগর, সওদানগর, নুরনগর, দানিশ মহল্লা, মসজিদ মহল্লা ও নিয়ামতপুর, জিটি রোডের পূর্ব ও পশ্চিমাংশ, দাসপাড়া-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এই বিপর্যয় চলছে। স্থানীয় বাসিন্দা বিষ্ণু রুইদাস বলেন, ‘‘দিনে অন্তত আট ঘণ্টা বিদ্যুত থাকছে না। কিছুক্ষণের জন্য বিদ্যুৎ আসছে। ফের চলে যাচ্ছে।’’ আর এক বাসিন্দা শেখ আনোয়ারের অভিযোগ, ‘‘ঘনঘন লোডশেডিং বন্ধে বিদ্যুৎ দফতরে জানিয়েও কিছু লাভ হচ্ছে না।’’
শনিবার ছিল ইদ। বাসিন্দারা জানালেন সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ বিদ্যুৎ চলে যায়। সাড়ে ছ’টা নাগাদ চলে আসে। মিনিট দশেক থাকার পরে ফের চলে যায়। রাত সাড়ে আটটাতেও বিদ্যুৎ না আসায় কয়েকশো বাসিন্দা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভের জেরে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। দু’দিকে সার বেঁধে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ। সমস্যা না মেটানো পর্যন্ত অবরোধ তোলা হবে না বলে জানিয়ে পুলিশকে জানিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। রাত প্রায় সাড়ে ন’টা নাগাদ এলাকায় পৌঁছন স্থানীয় ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মীর হাসিম। তিনি বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
কাউন্সিলর তথা আসানসোল পুরসভার সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের মেয়র পারিষদ মীর হাসিম এই ঘটনার জন্য পুরোপুরি বিদ্যুৎ দফতরকে দায়ী করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘গত এক মাস ধরে লাগাতার এই সমস্যা চলছে। বার বার বলার পরেও কোনও হেলদোল দেখাচ্ছেন না দফতরের আধিকারিকেরা।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং থাকার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের বরাকরের শাখায় ফোন করেন। কিন্তু সেখান থেকে বর্ধমানে ফোন করে অভিযোগ জানানোর কথা বলে ফোন কেটে দেওয়া হচ্ছে। আবার বর্ধমানের টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করা হলে, সেখান থেকে বরাকরের দফতরে ফোল করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কাউন্সিলর বলেন, ‘‘এই অবস্থায় বাসিন্দারা বুঝতেই পারছেন না তাঁদের কী করা উচিত।’’
বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে, সংস্থার বরাকর শাখার প্রধান আধিকারিক শাকিল খান ফোন কেটে দেন। তাঁর দু’টি ফোন নম্বরে এসএমএস পাঠানো হলেও কোনও জবাব মেলেনি।