সকালে সরগরম রাস্তা। নিজস্ব চিত্র
সকালে রাস্তাঘাটে গিজগিজে ভিড়। বিকেলে ‘লকডাউন’ শুরু হলে সব ভোঁ ভা। কাটোয়া শহরের এমন ছবি, চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের। শহরবাসীর অনেকেও কয়েকদিন টানা ‘লকডাউন’-এর পক্ষে সওয়াল করেছেন।
সোমবার সকাল থেকে আনাজ, মাছ বাজারে স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় তুলে লোকের আনাগোনা দেখা গিয়েছে। পথচলতি অনেকের মুখ নয়, থুতনিতে ঝুলছিল ‘মাস্ক’। তার সঙ্গে রাস্তায় মানুষকে সচেতন করতে প্রচার চালিয়েছে পুলিশ। আবার বিকেল ৫টা বাজতেই ঝাঁপ পড়েছে সব দোকানে। রাস্তাঘাটও ফাঁকা। দু’বেলার দুই ছবি দেখে প্রশ্ন উঠছে, এক বেলা নিয়ন্ত্রণ মেনে করোনা-সংক্রমণ রোখা যাবে তো! প্রশাসনের অবশ্য দাবি, জনজীবন স্বাভাবিক রাখার বিষয়টি ভাবতে হচ্ছে। তবে প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
আংশিক ‘লকডাউন’ নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরাও। জেলা বিজেপি সভাপতি (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, “প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে আমরা মান্যতা দিচ্ছি। কিন্তু কাটোয়ায় যে ভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তাতে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করছি।’’ সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, “প্রশাসনের পাশে আছি। তবে করোনা-সংক্রমণ আটকানোটা জরুরি।’’
শহরে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। একাধিক মানুষের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বহু এলাকা বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। তার পরেও অভিযোগ, স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অনেকেই। কাটোয়া শহরের মাধবীতলার বাসিন্দা, ব্যবসায়ী মলয় দাস বলেন, “সারাদিন কাছারি রোড থেকে শুরু করে স্টেশনবাজার, বাসস্ট্যাণ্ড, ফেরিঘাটগুলিতে ভিড় থাকছে। বিকেলের পরে এমনিতেই বেশির ভাগ মানুষ বাড়িতে ঢুকে যান। তখন শুরু হচ্ছে লকডাউন। আমাদের প্রশ্ন, করোনাভাইরাস কি শুধু বিকেল ৫টা পরে বার হয়!’’ কাছারি রোডের এক ব্যবসায়ী জগদীশ সাধুরও মত, ‘‘শত্রু যখন অদৃশ্য তখন লুকিয়ে থাকাই শ্রেয়। তাই করোনার হাত থেকে বাঁচতে গেলে শুধু বিকেল নয় অন্তত কিছু দিন সকাল থেকেই গৃহবন্দি থাকা দরকার। এতে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হলেও জীবনের স্বার্থে তা মেনে নেওয়া উচিত।’’
কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মানুষের রুটি-রুজির দিকটা খেয়াল রাখতে হচ্ছে। মানুষকে সচেতন হতেই হবে। বারবার অনুরোধ করছি, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বার হবেন না।’’ মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্লও বলেন, “সামগ্রিক পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত পাল্টানো হতে পারে।’’