প্রতীকী ছবি।
প্রতি বছরই গ্রামের বসতির দিকে এগোচ্ছে নদী। কিন্তু নদীর পাড় ভাঙা আটকাতে পাকা বন্দোবস্ত হয়নি, অভিযোগ কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট থেকে পূর্বস্থলী— ভাঙন কবলিত নানা এলাকার বাসিন্দাদেরই। প্রশাসন থেকে জনপ্রতিনিধিরা অবশ্য ভাঙন রোধে গড়িমসির কথা মানছেন না।
সম্প্রতি পূর্বস্থলী ২ ব্লক এবং কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের ভাঙন পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল। তিনি জানান, পূর্বস্থলী ২ ব্লকের বহড়া থেকে সিমুলডাঙা এলাকায় ১ কিলোমিটার, চন্দনপুর থেকে সন্তোষপুর পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার, মেড়তলা পঞ্চায়েতের কুঠুরিয়া থেকে মাঠপাড়া পর্যন্ত দু’কিলোমিটার এলাকায় পাড় বাঁধানোর দরকার রয়েছে। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে দুই এলাকার ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ভাঙন পরিস্থিতি নিয়ে সরকারেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। সাংসদের দাবি, আগে কিছু কিছু জায়গায় বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা টেকেনি। পাকাপাকি ভাবে ভাঙন রুখতে লোহার খাঁচা এবং পাথর দিয়ে পাড় বাঁধাতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
সেচ দফতরের কাটোয়া মহকুমার সহকারী বাস্তুকার সোমনাথ ঘোষের দাবি, এখন অজয়ের ভাঙনের সমস্যা আর সে ভাবে নেই। ভাগীরথীর ভাঙন রোধের জন্য অগ্রদ্বীপ ও কেতুগ্রামের মৌগ্রাম এলাকায় কাজ হবে, আশ্বাস তাঁর। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পাড় ভাঙা আটকাতে কেতুগ্রাম ২ ব্লকে মৌগ্রাম ও নতুনগ্রামে একশো দিনের কাজে ভেটিভার ঘাস রোপণ শুরু হয়েছে। পাড় ধরে প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার এই ঘাস রোপণ হয়ে গেলে ভাঙন অনেকটা বন্ধ করা যাবে বলে আশা আধিকারিকদের। সম্প্রতি কাটোয়া মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকেরা এই কাজ পরিদর্শনেও যান। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজেরা দাবি করেন, ‘‘নদী ভাঙন রোধে রাজ্য সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।’’
মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল বলেন, ‘‘নদী ভাঙন রোধের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আলোচনা করা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কেতুগ্রামের মৌগ্রাম-সহ কয়েকটি এলাকায় ভেটিভার ঘাস রোপণ করা শুরু হয়েছে।’’
ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের অবশ্য দাবি, বছরের পর বছর ধরে নানা আশ্বাস পেয়ে আসছেন তাঁরা। গ্রামের বাকি অংশ তলিয়ে যাওয়ার আগে পাড় বাঁধানোর ব্যবস্থা হোক, দাবি তাঁদের।