কালনায় লাইন নিয়ন্ত্রণ। নিজস্ব চিত্র।
করোনা-টিকার টোকেনের জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন বেশ কয়েকজন। লাইনে দূরত্ব-বিধি মানা হয়নি বলেও অভিযোগ। কালনা পুরনো বাসস্ট্যান্ডের কাছে পুরসভার ‘উত্তরণ’ ভবনের সামনে টোকেনের লাইনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় বুধবার। পুলিশের হস্তক্ষেপে লাইন ভেঙে দু’টি করা হলেও দূরত্ববিধি ছিল না বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। সন্ধ্যা ৬টার পরেও লাইনে প্রায় ৬০০ মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
কালনা মহকুমা হাসপাতালে টিকার প্রথম ডোজ় নেওয়ার জন্য টোকেন নিতে হচ্ছে পুরসভার ওই ভবন থেকে। গত কয়েকদিন ধরেই সেখানে দীর্ঘ লাইন পড়ছে। পুরসভার আধিকারিকেরা জানান, এ দিন ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। ধাত্রীগ্রাম, সমুদ্রগড়, হুগলির গুপ্তিপাড়া ও নদিয়ার শান্তিপুর-সহ অনেক এলাকার মানুষ লাইনে দাঁড়ান রাত থেকে। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছিল, এক সঙ্গে বেশ কয়েকদিনের টোকেন দেওয়া হবে। সে কারণেই ভিড় বেশি হয়েছে বলে অনুমান পুর-কর্তৃপক্ষের।
সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন সমুদ্রগড়ের ষাটোর্ধ্ব মধুবন্তী ঘোষ। দুপুর ২টো নাগাদ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আশপাশের লোকেরা মাথায় জল দেওয়ার পরে সুস্থ হই।’’ লাইনে দাঁড়িয়ে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল ধাত্রীগ্রামের রজক দাসের। সেখানে হাজির সিভিক ভলান্টিয়ারেরা তাঁর শুশ্রুষা করেন। পুরসভার এক কর্মী বলেন, ‘‘প্রথম ডোজ়ের টোকেন বিলি শুরু হতেই গ্রামাঞ্চল থেকে বহু মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। অনেকে ১৫-২০ ঘণ্টা লাইন দিচ্ছেন।’’
টোকেন পেতে লাইন ভাঙার অভিযোগে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় বেলায়। বিক্ষোভ দেখান অনেকে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জেলার স্বাস্থ্য-কর্তাদের সঙ্গে টিকাকরণ নিয়ে এ দিন ভার্চুয়াল বৈঠকে হাজির ছিলেন পুরসভার প্রতিনিধিরা। সূত্রের খবর, টোকেন বিলি ঘিরে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। অবস্থা সামাল দিতে ধাত্রীগ্রাম, সমুদ্রগড়-সহ কিছু এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকার জোগান বাড়ানোর দাবিও ওঠে।
কালনার পুর-প্রশাসক আনন্দ দত্ত বলেন, ‘‘রাত ১০টা পর্যন্ত ২,৭০০ টোকেন বিলির পরিকল্পনা রয়েছে। নির্দিষ্ট দিনে ওই টোকেন নিয়ে হাসপাতালে গেলে টিকা মিলবে। এ দিন বৈঠকে আরও বেশি টিকা পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছি। আশা করছি, ভিড় বেশি দিন থাকবে না।’’ কালনা মহকুমা হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম বিশ্বাস বলেন, ‘‘হাসপাতালে বৃহস্পতিবার থেকে তিনটি টিকাকরণ কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। দিনে ১,৬০০-১,৭০০ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কয়েকদিন পরে মহিলা ও পুরুষদের আলাদা লাইন করার পরিকল্পনাও হয়েছে।’’