রক্ষীবিহীন গেট। নিজস্ব চিত্র
মাঝরাতে স্যালাইনের বোতল হাতে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন এক রোগী। বৃহস্পতিবার সারা দিনেও খোঁজ মিলল না তাঁর। পরে কালনা মহকুমা হাসপাতাল ও কালনা থানায় নিরাপত্তার গাফিলতির অভিযোগ জানান ওই রোগীর পরিবার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও মেনে নিয়েছেন রক্ষীর অভাবের কথা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ মাসের ৪ তারিখ তীব্র পেট যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন কালনা ১ ব্লকের কাঁকুরিয়া পঞ্চায়েতের কৈলাসপুরের বাসিন্দা আকলু শেখ। বিভিন্ন পরীক্ষার পরে দেখা যায় বছর পঞ্চাশের এই ব্যাক্তির গলব্লাডারে পাথর রয়েছে। অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয় তাঁকে। পরিবারের দাবি, বুধবার রাতে স্যালাইন চলছিল আকলু শেখের। শয্যার পাশে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তাঁর স্ত্রী রেমাজন বিবি। ভোরে ঘুম ভাঙতে দেখেন স্বামী বিছানায় নেই। হাসপাতাল চত্বর তো বটেই, বাইরে খোঁজ নিয়েও সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর কোনও হদিস পাননি তাঁরা। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, রাত সওয়া ১২টা নাগাদ স্যালাইনের বোতল হাতে নিয়েই ওয়ার্ডের বাইরে বেরিয়ে যান ওই রোগী। মিনিট চারেক পরে হাসপাতাল থেকেও বেরিয়ে যেতে দেখা যায় তাঁকে। প্রশ্ন উঠছে, এত রাতে নিরাপত্তা রক্ষীর চোখ এড়িয়ে হাসপাতাল ছেড়ে বেরোলেন কী করে রোগী।
হাসপাতালের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই পর্যাপ্ত রক্ষী নেই। দিনে তো বটেই, রাতেও হাসপাতালের সব দরজার বাইরে নিরাপত্তা রক্ষীরা পাহারায় থাকেন না। ফলে যত্রতত্র বিভিন্ন ওয়ার্ডে লোকজন ঢুকে পড়ে। দিনভর রোগীর আত্মীয়দের ভিড়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিতেও বাধা পান নার্স ও চিকিৎসকেরা। বুধবারও গোটা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাহারার জন্য এক জন মাত্র রক্ষী ছিলেন। নিখোঁজের ছেলে জাকির শেখ বলেন, ‘‘কয়েক রাত বাবার জন্য জেগে ওই রাতে মা ঘুমিয়ে পড়েছিল। হাসপাতালের নিরাপত্তা কড়া হলে বাবা বাইরে যেতে পারত না।’’
হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা ঘটলে থানায় বিষয়টি জানাই। এ ক্ষেত্রেও তা করা হয়েছে। রক্ষীর অভাবের কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি ১০ জন নিরাপত্তা রক্ষী মিলবে।’’ সুপারের দাবি, রক্ষী পেলে নিরাপত্তার গলদ দূর করা যাবে।