হাসপাতালের সামনে। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে হাসপাতালের সামনে ও পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন রোগীর পরিজনেরা। বুধবার দুর্গাপুরের ঘটনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কমব্যাট ফোর্স পৌঁছয়। শেষ পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, যথাযথ চিকিৎসা করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম তেজা দেবী (৩১)। বাড়ি বেনাচিতির আমবাগানে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পিঠে ব্যথা নিয়ে তেজা দেবী প্রথমে ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে, ১৩ অগস্ট তাঁকে সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। মৃতার পরিজনদের তরফে ছোটু সিংহ জানান, প্রথমে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, রোগীর হার্টের ভাল্ভে সমস্যা রয়েছে। তাই প্রথমেই রোগীকে আইসিইউতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর দাবি, ‘‘কিছু ক্ষণ পরে ফোন করে জানানো হয়, রোগীর শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হয়েছে। আমরা গিয়ে রোগীর পায়ে হাত দিয়ে বুঝতে পারি, আর কোনও আশা নেই। বলা হয়, কোমায় চলে গিয়েছেন। আমাদের সন্দেহ, রোগী ততক্ষণে মারা গিয়েছেন।’’ বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার তাঁরা এক দফায় হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। ছোটুবাবুর আরও দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখনও দাবি করেন, রোগীর প্রাণ রয়েছে। চিকিৎসা চলছে। শেষ পর্যন্ত বুধবার সকালে তাঁদের জানানো হয়, রোগী মারা গিয়েছেন।
এর পরেই রোগীর পরিজনেরা হাসপাতালের গেটে বসে পড়েন। হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ তুলে দেহ নিতে অস্বীকার করেন। ছোটুবাবুরা বলেন, ‘‘আমরা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই। দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাঁরা রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত পুলিশের মধ্যস্থতায় তাঁরা কথা বলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাস দেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই রোগী হার্টের রোগে আক্রান্ত ছিলেন। পরিবারের লোকজন সম্ভবত আগে বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পারেননি। তাই আগে চিকিৎসা হয়নি। হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল সুপার দুর্গাদাস রায় বলেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যু দুঃখের। তবে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ আমরা অস্বীকার করছি। চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়।’’